রাজধানীর শনির আখড়ায় আজ দিনভর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখার পর সন্ধ্যায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। রাত ১০টার পর সংঘর্ষ আর না হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আন্দোলনকারীরা এখনো দুই দিকে অবস্থান নিয়ে আছেন। ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে এখনো যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এর মধ্যে বিক্ষোভকারীরা শনির আখড়ার কাজলায় হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় আগুন দিয়েছেন বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।
এদিকে সন্ধ্যায় সেখানে সংঘর্ষের সময় পুলিশের শটগানের গুলিতে আহত ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুই বছরের এক শিশুও রয়েছে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন ইরান, সোহাগ, বাবু মিয়া ও তাঁর শিশুপুত্র রোহিত মিয়া এবং স্কুলছাত্র মাহিম আহমেদ। আহত ব্যবসায়ী বাবু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, তিনি দনিয়া এলাকায় শিশুসন্তান রোহিতকে নিয়ে বাসার ফটকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন পুলিশের ছোড়া ছররা গুলি তাঁর ও ছেলের গায়ে লাগে।
আহত স্কুলছাত্র মাহিম আহমেদের বাবা মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যার দিকে কোচিং শেষ করে তিনি বাসায় ফিরছিলেন। তখন পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার মধ্যে পড়েন। এ সময় পুলিশের ছররা গুলিতে তাঁর ছেলে আহত হয়।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে শনির আখড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে কোটা সংস্কারপন্থী শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা এই মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। সন্ধ্যার দিকে পুলিশ অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
রাত আটটার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের লোকজন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছিল। সন্ধ্যার দিকে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। পুলিশের গুলিতে কেউ আহত হয়েছে কি না, তা তিনি জানেন না বলে দাবি করেন।
রাত ১০টার পর ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি র্যাব ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা যাত্রাবাড়ী থানার আশপাশে অবস্থান নিয়ে আছেন। অপর দিকে কাজলা এলাকায় আন্দোলনকারীরা অবস্থান করছেন। এখন পর্যন্ত ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।