রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে ১৬ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁদের মধ্যে কেউ গিয়েছিলেন ওই ভবনে পণ্য কিনতে, কেউ বের হয়েছিলেন ইফতারি কিনতে, কেউবা ব্যবসায়িক কাজে রাস্তায় বের হয়েছিলেন।
বিস্ফোরণে মারা গেছেন যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা মনসুর হোসাইন (৪০) ও তাঁর খালাতো ভাই আলামিন (২৩)। মনসুর গুলিস্তানের একটি বিপণিবিতানে মশারির ব্যবসা করতেন। আলামিন বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএর শিক্ষার্থী ছিলেন। মনসুরের ভায়রা মুরাদ হোসেন আজ মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বিস্ফোরণের ২০ মিনিট আগে সিদ্দিকবাজারের ওই ভবনে স্যানিটারি পণ্য কিনতে গিয়েছিলেন মনসুর। টেলিভিশনে বিস্ফোরণের খবর শোনার পর তাঁকে ফোন করে পাওয়া যায়নি। এরপর ঘটনাস্থলে এসেও তাঁর খোজ মেলেনি। কোথাও না পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান তাঁরা। সেখানে গিয়ে মর্গে মনসুরের লাশ পাওয়া যায়।
মনসুরের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের উত্তর মতলবে। তাঁর আট বছরের একটি ছেলে রয়েছে।
সিদ্দিকবাজারের ঘটনায় নিহত ইসহাক মৃধা (৩১) থাকতেন নারায়ণগঞ্জে। ঢাকার ইসলামপুরে কাপড়ের দোকান ছিল তাঁর। মঙ্গলবার বিকেলে যখন বিস্ফোরণ হয়, তখন ভবনটির সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন তিনি। বিস্ফোরণের আঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
ইসহাকের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, ব্যবসায়িক কাজে বিকেলে গুলিস্তান এলাকায় গিয়েছিলেন তিনি। দোকানে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাতে হয়েছে ইসহাককে। তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে।
আরেক নিহত ব্যক্তির নাম সুমন (২১)। থাকতেন বংশালের সুরিটোলায়। বিকেলে মায়ের জন্য ইফতারি কিনতে বের হয়েছিলেন। কিন্তু বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
কাতারপ্রবাসী সুমন চার মাসের ছুটিতে দেশে এসেছিলেন। মা, দুই বোন আর এক ভাইকে নিয়ে বংশালের সুরিটোলায় থাকতেন। আজ বিকেলে মায়ের জন্য ইফতারি কিনতে বের হয়ে বিস্ফোরণে মারা যান তিনি। মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে আসেন তাঁর স্বজনেরা। বিলাপ করতে করতে বোন সোমা বলেন ‘একটু আগে ভাই আমার লগে দেখা করে আসল। ও আল্লাহ, তুমি এইডা কী করলা?’
বিস্ফোরণে নিহত আর যাঁদের পরিচয় পাওয়া গেছে, তাঁরা হলেন লালবাগের ইসলামবাগের দম্পতি মমিনুল ইসলাম (৩৮) ও তাঁর স্ত্রী নদী আক্তার। বংশালের আলুবাজারের মো. ইসমাঈল হোসেন (৪২), কেরানীগঞ্জের দক্ষিণ চুনকুটিয়ার মাস্টারবাড়ির মো. রাহাত (১৮)। অন্যরা হলেন মাঈন উদ্দিন (৫০), নাজমুল হোসেন (২৫), ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫), আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪), আকুতি বেগম (৭০), ইদ্রিস মীর (৬০), হৃদয় (২০) ও নুরুল ইসলাম ভূইয়া (৫৫)।