রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে বসবাসরত কাউকে উচ্ছেদ করা হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। তাই কোনো ধরনের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হতে সেখানকার বাসিন্দাদের অনুরোধ করেছেন তিনি।
আজ রোববার বিকেলে নগর ভবনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র এসব কথা বলেন। সভায় কামরাঙ্গীরচরের শতাধিক বাসিন্দা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় মেয়র তাপস বলেন, ‘কামরাঙ্গীরচরের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আপনাদের উচ্ছেদ করা হবে বলে একটি শঙ্কা আছে। আমি আগেও পরিষ্কার করেছি, আবারও বলছি, সেখান থেকে কাউকে উচ্ছেদ করা হবে না। এই উন্নয়ন পরিকল্পনা আপনাদের জন্য। সেখানে আপনারা থাকবেন, আপনাদের পরিবার থাকবে, আপনাদের বংশধরেরা থাকবে। কিন্তু আপনারা অমূলক অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না।’
এ সময় কামরাঙ্গীরচরকেন্দ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেন, ‘আমরা পোস্তগোলা থেকে রায়েরবাজার পর্যন্ত ৮ লেনের ইনার সার্কুলার রোড করছি। এ ছাড়া কামরাঙ্গীরচরের ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাউচর সড়ক ৬ লেনে উন্নীত করার জন্য কাউকে উচ্ছেদের প্রয়োজনই হবে না। ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডে নদীর পাড় ঘেঁষে ৪ সারির যে সড়ক প্রশস্ত করা হচ্ছে, সেখানে ব্যক্তিমালিকানাধীন কারও এক ইঞ্চি জমিও পড়ছে না।’
মেয়র তাপস আরও বলেন, ‘৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৮ লেনের সড়ক প্রশস্ত করার জন্য মাত্র ৩ দশমিক ৪ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। বাকিটা পুরোটাই সরকারি জমি। সেই জমিতে যাদের বাড়ি পড়বে, আমরা তাদের সরকারি নিয়মে ক্ষতিপূরণ তো দেবই। পাশাপাশি আমি আর কামরুল চাচা (অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম) তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করব। সুতরাং, অহেতুক শঙ্কার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।’
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, ‘উনি (মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস) আমাদের যে উন্নয়ন পরিকল্পনা দেখিয়েছেন, তাতে আমাদের মাঝে যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব, ভয়ভীতি ছিল, তা অনেকাংশেই কমে এসেছে।’
মতবিনিময় সভায় কামরাঙ্গীরচরবাসীর পক্ষে মেয়রের কাছে একটি স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়। এ সময় অন্যান্যের মাঝে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামানস ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, কামরাঙ্গীরচর এলাকায় (৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড) একটি পরিকল্পিত কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক অঞ্চল (সিবিডি) গড়ে তোলার কার্যক্রম চলছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন চিঠি দিয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানায়। সিবিডি চূড়ান্ত হওয়ার আগে সেখানে নতুন ভবন বা স্থাপনা নির্মাণ করা হলে জটিলতা হতে পারে। তাই কামরাঙ্গীরচর এলাকায় নতুন কোনো ভবন বা স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দেওয়া স্থগিত রাখতে রাজউককে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি।