ঢাকা-১৩ আসনের মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া হাউজিং স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে বিকেলে নৌকার সমর্থকেরা লাইন ধরে ভোট দেন
ঢাকা-১৩ আসনের মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া হাউজিং স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে বিকেলে নৌকার সমর্থকেরা লাইন ধরে ভোট দেন

ঢাকা-১৩

প্রথম ৬ ঘণ্টায় ৫৫৪ ভোট, শেষের ২ ঘণ্টায় ৫২১টি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৩ আসনের ৭৯ নম্বর কেন্দ্রে (পুরুষ) প্রথম ছয় ঘণ্টায় (সকাল আটটা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত) ভোট পড়েছিল ৫৫৪টি। তবে বেলা দুইটার পর থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত শেষের দুই ঘণ্টায় এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৫২১টি। এর মধ্যে শেষ আধা ঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্রটির ৭টি বুথে ৩৮০টি ভোট পড়েছে।

কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ভোটের এই তথ্য পাওয়া গেছে। ঢাকা-১৩ আসনের এই কেন্দ্র মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া হাউজিং স্কুল অ্যান্ড কলেজে। কেন্দ্রটিতে মোট ভোটার ছিলেন ৩ হাজার ৭৪৯ জন। সারা দিনে এই কেন্দ্রে মোট ১ হাজার ৭৫টি ভোট পড়েছে।

ঢাকা-১৩ আসনে নৌকার প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির (নানক)। এই আসনে আরও পাঁচজন প্রার্থী থাকলেও তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো কেউ নেই।

প্রিসাইডিং কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সকাল ১০টা পর্যন্ত কেন্দ্রটিতে ৯২টি ভোট পড়ে, যা মোট ভোটারের ২ দশমিক ৫ শতাংশ। আর দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়ার হার ৭ দশমিক ৮। এই সময়ের মধ্যে কেন্দ্রটিতে ২৯৩টি ভোট পড়েছিল। সকাল ৮টায় ভোট শুরুর ৬ ঘণ্টা পর বেলা ২টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ৫৫৪টি ভোট পড়েছিল, যা ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ।

শেষের দুই ঘণ্টার মধ্যেই (বেলা দুইটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত) কেন্দ্রটিতে আরও ১৩ দশমিক ৯০ শতাংশ ভোট পড়েছে। সংখ্যার দিক থেকে যা ৫২১টি। সব মিলিয়ে ভোটদান শেষে এই কেন্দ্রের ভোটের হার দাঁড়ায় ২৮ দশমিক ৬৮।

বেলা তিনটার দিকে কেন্দ্রটিতে গিয়ে দেখা যায়, ভোটকেন্দ্রের বাইরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকদের ভিড়। তবে কেন্দ্রের ভেতরটা অনেকটাই ফাঁকা। বুথগুলোতে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা, পোলিং এজেন্টসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অলস সময় কাটাচ্ছিলেন। কেউ কেউ ঝিমুনি আসায় বেঞ্চে মাথা রেখে ঘুমিয়েও নিচ্ছিলেন। তখন সেখানে চার-পাঁচ মিনিট সময় পরপর ভোটাররা ভোট দিতে আসছিলেন।

বেলা সাড়ে তিনটার পর থেকে হঠাৎ করেই কেন্দ্রটিতে ভোটারদের ভিড় বাড়তে থাকে, যাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন কেন্দ্রের বাইরে অবস্থানকারী নৌকা প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকেরা। কেন্দ্রের ভেতরে গিয়ে বুথের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে তাঁরা ভোট দিচ্ছিলেন। এভাবে বেশি ভোট দিতে দেখা গেছে দ্বিতীয় তলায় শেষ প্রান্তে থাকা ৪ নম্বর বুথে।

ভোট দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ভোট দিতে নতুন করে কেন্দ্রের ভেতর প্রবেশ করা অন্যদের উদ্দেশে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় শুধু বলছিলেন, ‘আমরা দিয়া আসছি, এখন তোরা যা।’  

বেলা সাড়ে তিনটার কিছু আগে কেন্দ্রটির প্রতিটি বুথে গিয়ে, সর্বশেষ কত ভোট পড়ল, এই তথ্য সংগ্রহ করেন প্রথম আলোর এই প্রতিবেদক। এই হিসাব অনুযায়ী বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কেন্দ্রটির সাতটি বুথে মোট ভোট পড়েছিল ৬৯৫টি। ভোট প্রদানের সংখ্যাটি নির্ধারিত সময়; অর্থাৎ বিকেল চারটার পর হয় ১ হাজার ৭৫। শেষের আধা ঘণ্টায় ওই কেন্দ্রের বিভিন্ন বুথে ৩৮০টি ভোট পড়েছে।

প্রতিবেদক যখন বিভিন্ন বুথ থেকে তথ্য নেন, তখন কেন্দ্রটির ১ নম্বর বুথে ভোট ছিল ৯৪টি। ভোট প্রদান শেষে ওই বুথে ভোট পড়ার সংখ্যা হয় ১৫২টি। যে ৪ নম্বর বুথে শেষের দিকে ভিড় করে ভোট দেওয়া হয়, সেই বুথে বেলা সাড়ে তিনটায় ছিল ১১৩ ভোট, শেষ পর্যন্ত সেটি হয় ২০০।

এসব বিষয়ে কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর কেউ কোনো মন্তব্য করতে চাননি। দায়িত্ব পালনকারী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা শুধু নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিলেন, এই ভোট আর দেখার কী আছে? এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কেন্দ্রটিতে গিয়ে ভোটার উপস্থিতি খুব একটা দেখা যায়নি।

লালমাটিয়ার হাউজিং স্কুলে আরেকটি ভোটকেন্দ্র ছিল। ঢাকা-১৩-এর ৭৮ নম্বর কেন্দ্রটি ছিল নারীদের। বেলা দুইটা পর্যন্ত কেন্দ্রটিতে ১০ দশমিক ৫৬ শতাংশ ভোট পড়ে বলে জানান কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা জাহিদুল হক। বেলা ৩টা ৫০ মিনিটের দিকেও নারীদের ওই কেন্দ্রের ৬ ও ৭ নম্বর বুথে ৩১টি করে ভোট পড়ে বলে জানান বুথ দুটির পোলিং কর্মকর্তারা। ৬ নম্বর বুথে মোট ভোটার ৪২৯ জন এবং ৭ নম্বর বুথে ৪৩৮ জন ভোটার ছিলেন।