হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে গতকাল সোমবার রাতে তাঁর চিকিৎসকেরা একটি পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন। এখন তাঁর শারীরিক অবস্থা ‘স্থিতিশীল’। তবে সিসিইউতেই তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
বিএনপি নেত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন গতকাল রাতে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে, তবে তা হচ্ছে খুবই ধীরগতিতে।
সংশ্লিষ্ট অন্য একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপি নেত্রীর মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা গতকাল রাতে বৈঠকে তাঁর স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা অনলাইনে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গেও পরামর্শ করেন।
বিদেশি সেসব চিকিৎসকও খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্ত রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় অনলাইনে আলোচনা করে পরামর্শ নিয়ে থাকেন খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা।
গতকাল দুপুরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে দেখতে গিয়েছিলেন। এরপর মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, তাঁদের দলের নেত্রী খুবই অসুস্থ।
বিএনপি নেত্রীকে গত শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সরাসরি সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির পর থেকেই খালেদা জিয়াকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
শনিবার মধ্যরাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাঁর মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা ওই রাতে গুলশানের বাসভবনে গিয়ে তাঁর স্বাস্থ্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে শনিবার রাতেই তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর খালেদা জিয়াকে শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
গত ২৭ মার্চও খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কিছুটা খারাপ হয়েছিল। এরপর চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনে গিয়ে তাঁর স্বাস্থ্যের কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন এবং তাঁকে বাসায় রেখেই চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। শনিবার আবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালের সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, হৃদ্রোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।
গত বছরের ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
সে সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে তাঁর পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। এমন পরিপ্রেক্ষিতে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় ২৭ অক্টোবর।