ঢাকার যানজটের নতুন কেন্দ্র এখন ফার্মগেট

দুই দশকে ১০টি উড়ালসড়ক নির্মাণ। তবু ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহর।

ঢাকা উড়ালসড়ক বা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পর রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে। সেখানে মেট্রোরেল ও উড়ালসড়কের দুটি খুঁটি (পিলার) পড়েছে সড়কের মধ্যে। গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ফার্মগেটে
ছবি: সাজিদ হোসেন

রাজধানীর ফার্মগেটের যে জায়গায় ঢাকা উড়ালসড়ক বা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি পথ (লুপ) নেমেছে, সেখানে গত বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে যানজটে আটকে ছিলেন বাসচালক মো. আশিক। তিনি তানজিল পরিবহনের একটি বাস চালান।

আশিক প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ঢাকায় ছয়–সাত বছর বাস চালান। তবে ফার্মগেট, খামারবাড়ি মোড়, কারওয়ানবাজার, বাংলামোটর ও শাহবাগে এখনকার মতো যানজট কখনো দেখেননি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন করে ওই সব এলাকায় যানজট বাড়ার কারণ ঢাকা উড়ালসড়ক। গত ৩ সেপ্টেম্বর এই উড়ালসড়কের কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত অংশ চালু হয়। এরপর প্রতিদিন রাজধানীর উত্তরাংশ থেকে দিনে প্রায় পাঁচ হাজার যানবাহন দ্রুত ফার্মগেটে এসে নামছে। এসব যানবাহনের বড় অংশ খামারবাড়ি মোড় ঘুরে ফার্মগেট হয়ে কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ ধরে কারওয়ানবাজার, শাহবাগ ও অন্যান্য এলাকায় যাচ্ছে।

ঢাকা উড়ালসড়ক চালুর পর ফার্মগেট ও তেজগাঁও অংশে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের কারণে গতি ধীর হচ্ছে। এর প্রভাব আশপাশের এলাকায়ও পড়ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান

ঢাকার উত্তরাংশমুখী যানবাহন ঢাকা উড়ালসড়কে উঠতে বিজয় সরণি ও তেজগাঁওয়ের সড়ক ব্যবহার করছে। ফলে যানজট বেড়েছে বিজয় সরণি, তেজগাঁও, সাতরাস্তাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায়। ট্রাফিক পুলিশের হিসাবে আগে থেকেই যানজটের কেন্দ্র হিসেবে গণ্য করা হয় ঢাকার ১৫টি এলাকাকে। সেখানেও দিন দিন যানজট বাড়ছে।

সব মিলিয়ে ঢাকায় যানবাহনের গতি কমছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চের গবেষণার ওপর ভিত্তি করে গত সেপ্টেম্বরে প্রভাবশালী সাময়িকী টাইম–এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহরের তালিকায় এখন ঢাকা শীর্ষে।

প্রতিদিন রাজধানীর উত্তরাংশ থেকে দিনে প্রায় পাঁচ হাজার যানবাহন দ্রুত ফার্মগেটে এসে নামছে। এসব যানবাহনের বড় অংশ খামারবাড়ি মোড় ঘুরে ফার্মগেট হয়ে কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ ধরে কারওয়ানবাজার, শাহবাগ ও অন্যান্য এলাকায় যাচ্ছে।

ঢাকার যানজট কমাতে অর্থ ব্যয়ে কার্পণ্য নেই। গত দুই দশকে রাজধানীতে ৯টি উড়ালসড়ক ও সমজাতীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। আরও একটির (ঢাকা উড়ালসড়ক) কাজ চলছে। এসব প্রকল্পে ব্যয় মোট ১৯ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা। দু–একটি উড়ালসড়কের ভালো সুফল পাওয়া যাচ্ছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উড়ালসড়কগুলোতে ওঠার মুখে ও নামার সময় যানজটে পড়তে হচ্ছে মানুষকে। কোনো কোনো উড়ালসড়ক দোতলা যানজটও তৈরি করছে। প্রশ্ন উঠেছে, এই বিপুল ব্যয়ের সুফল কতটুকু।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা উড়ালসড়ক চালুর পর ফার্মগেট ও তেজগাঁও অংশে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের কারণে গতি ধীর হচ্ছে। এর প্রভাব আশপাশের এলাকায়ও পড়ছে। তিনি বলেন, এই সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে। তা ছাড়া প্রকৌশলগত কিছু বিষয় আছে। সেগুলো নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।

‘দিনে পাঁচ ঘণ্টা রাস্তায় আটকে থাকি’

ঢাকায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) আওতাধীন এলাকার আয়তন দেড় হাজার বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ জনশুমারির (২০২২) তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় বাস করেন প্রায় ১ কোটি ৩ লাখ মানুষ। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হিসাবে, ঢাকা মহানগরে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ ৫২ হাজার।

মিরপুর থেকে মতিঝিল যেতে তার দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা লাগে। ফিরতে লাগে মোটামুটি একই সময়। তিনি বলেন, দিনে পাঁচ ঘণ্টা রাস্তায় আটকে থাকি। অথচ পথ মাত্র ১৪ কিলোমিটারের মতো।
বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিপুলসংখ্যক মানুষ, সড়কের অনুপাতে ব্যক্তিগত যানবাহন বেশি হওয়া এবং পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার ঘাটতি ঢাকাকে যানজটের নগরে পরিণত করেছে। ঢাকার ভেতরেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে যে সময় লাগছে, সেই সময়ে দূরদূরান্তের জেলায় চলে যাওয়া সম্ভব।

যেমন একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ মিরপুরের পল্লবী থেকে বাসে প্রতিদিন মতিঝিলে কর্মস্থলে যান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মিরপুর থেকে মতিঝিল যেতে তার দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা লাগে। ফিরতে লাগে মোটামুটি একই সময়। তিনি বলেন, দিনে পাঁচ ঘণ্টা রাস্তায় আটকে থাকি। অথচ পথ মাত্র ১৪ কিলোমিটারের মতো।

ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাদের দাবি, ফার্মগেট এলাকায় যানজট বাড়ার কারণ শুধু ঢাকা উড়ালসড়ক নয়, দু–একটি জায়গায় রাস্তা সরু হয়ে যাওয়ার কারণেও যানবাহনের গতি ধীর হয়ে যাচ্ছে। ফার্মগেটে মূল সড়কের মধে৵ পড়েছে মেট্রোরেল ও ঢাকা উড়ালসড়কের দুটি খুঁটি (পিলার)। মেট্রোরেলের দুই খুঁটির মধে৵র প্রশস্ততাও বেশি নয়।

ফার্মগেট, বিজয় সরণি ও তেজগাঁও এলাকায় যানবাহনের চাপ শিগগিরই কমার আশা নেই তিনটি কারণে।

প্রথমত, ঢাকা উড়ালসড়কের তেজগাঁও থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত চালু হওয়ার কথা আগামী বছর জুনে। কাজের অগ্রগতি বেশি নয়। ফলে ঢাকার উত্তরাংশ থেকে যানবাহনকে ফার্মগেটেই নামতে হবে আরও অনেক দিন। দ্বিতীয়ত, ৪ নভেম্বর মেট্রোরেলের ফার্মগেট স্টেশন চালু হওয়ার কথা। ফলে ফার্মগেটে মানুষের চাপ বাড়বে, যা যানবাহনের ভিড় বাড়াবে। তৃতীয়ত, ফার্মগেটে সড়কের মধে৵ থাকা মেট্রোরেল ও উড়ালসড়কের দুটি খুঁটি সরানোর উপায় নেই। সেখানে সড়ক সরুই থাকবে।

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের তেজগাঁও অঞ্চলের উপকমিশনার (ডিসি) মোস্তাক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা উড়ালসড়ক চালুর পর অতিরিক্ত গাড়ির চাপ গিয়ে পড়ছে ফার্মগেট ও আশপাশের এলাকায়। প্রকৌশলগত ত্রুটি ও উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে সমন্বয়হীনতার কারণে এই অঞ্চলে যানজটের তীব্রতা বেড়েছে।

ফার্মগেট, বিজয় সরণি ও তেজগাঁও এলাকায় যানবাহনের চাপ শিগগিরই কমার আশা নেই তিনটি কারণে।

ফার্মগেট অঞ্চলের এই যানজট যেমন মানুষের ভোগান্তি বাড়িয়েছে, তেমনি কমেছে বাসশ্রমিকদের আয়। বাসচালকেরা বলছেন, মাস দুয়েক আগেও তাঁরা মিরপুর-১ থেকে সদরঘাট পর্যন্ত দিনে চারটি ট্রিপ (আসা-যাওয়া মিলিয়ে একটি) দিতে পারতেন। এখন তিনটির বেশি সম্ভব হয় না। এতে তাঁদের আয় কমেছে।

তানজিল পরিবহনের চালক আশিক বলেন, ‘মালিকের জমা আড়াই হাজার টাকা দিতেই হয়। আমাগো ভাগের টাকাই কমেছে।’

ঢাকার ১৫ এলাকায় যানজট নিয়ন্ত্রণহীন

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা ফার্মগেট ও বিজয় সরণির বাইরে ১৫টি এলাকাকে যানজটের হটস্পট (কেন্দ্র) হিসেবে গণ্য করেন। যার মধ্যে রয়েছে কুড়িল বিশ্বরোড, বাড্ডা, রামপুরা, মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকা, পল্টন, গুলিস্তান, সদরঘাট, শাহবাগ, বাংলামোটর, মালিবাগ, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, নিউমার্কেট, সায়েন্স ল্যাব ও মিরপুর-১০ গোলচত্বর।

এসব এলাকায় কোথাও কোথাও যানজট নতুন করে বেড়েছে। কোথাও কোথাও আগে থেকে বেশি। যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদ এলাকা এবং মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারকেন্দ্রিক যানজট আরও বেড়েছে ২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু চালুর পর। ট্রাফিক পুলিশ বলছে, এখন ঢাকা-ভাঙা এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে অনেক বেশি যানবাহন চলাচল করছে। ওই সব যানবাহন দ্রুত ঢাকার মুখে চলে আসছে। ঢুকতে গিয়ে যানজট বাড়াচ্ছে।

যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদ থেকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার হয়ে এসে বিভিন্ন জায়গায় নামার পথে যানজট বেশি হয়। যেমন চাঁনখারপুলে গাড়ি নামার রাস্তা সরু। মুখে ক্রসিংও রয়েছে। ফলে সেখানে নামতে অনেক সময় লেগে যায়।

চাঁনখারপুল মোড়ে গতকাল রোববার দুপুরে আটকে ছিলেন শরিকি যাত্রার (রাইড শেয়ারিং) মোটরসাইকেল আরোহী সাদিকুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, উড়ালসড়ক থেকে নামার পথে ৩০০ মিটারের মধ্যে দুটি ‘ক্রসিং’ পার হতে হয়। ফলে এই পথে যানজট লেগেই থাকে।

শুধু যানবাহনের সংখ্যা নয়, যানজটের জন্য অব্যবস্থাপনাকেও দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। অব্যবস্থাপনার চিত্র দেখা গেল মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের গোলচত্বরে দাঁড়িয়ে। গতকাল রোববার সকালে সেখানে গিয়ে পাঁচ ধরনের অব্যবস্থাপনা দেখা যায়—১. ফুটপাতগুলোর প্রায় পুরোটা হকারদের দখলে। ফলে পথচারীরা রাস্তা দিয়ে হাঁটেন। ২. ট্রাফিক সংকেত (সিগন্যাল) ছাড়ার পর ওপাশে গিয়েই রাস্তা আটকে যাত্রী তোলা শুরু করে বাসগুলো।

উড়ালসড়ক থেকে নামার পথে ৩০০ মিটারের মধ্যে দুটি ‘ক্রসিং’ পার হতে হয়। ফলে এই পথে যানজট লেগেই থাকে।
মোটরসাইকেল আরোহী সাদিকুর রহমান

ফলে পেছনের যানবাহন সামনে আগাতে পারে না। ৩. গোলচত্বর দিয়ে একসময় রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ ছিল। এখন রিকশা চলে। মোড়ে ভিড় করে যাত্রীর অপেক্ষা করেন রিকশাচালকেরা। ফলে সড়ক সরু হয়ে যায়। ৪. পদচারী–সেতু থাকলেও মানুষ হাত তুলে যানবাহন থামিয়ে রাস্তা দিয়েই বেশি চলাচল করেন। ৫. রিকশা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও বাসচালকেরা সুযোগ পেলে সংকেত না মেনেই চলাচল শুরু করে দেন। ফলে জট তৈরি হয়।

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের মিরপুর অঞ্চলের সহকারী কমিশনার হালিমুল হারুন প্রথম আলোকে বলেন, গোলচত্বরটি রিকশামুক্ত করার চেষ্টা চলছে। ফুটপাত দখলমুক্ত করার বিষয়টি ট্রাফিক পুলিশের আওতাধীন নয়।

যানজট বাড়ার কারণ খুঁজতে গত এক সপ্তাহ রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে ঘুরেছেন এই প্রতিবেদক। দেখা গেছে, মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরের যে অব্যবস্থাপনা সেটি ঢাকার সব জায়গায়। ট্রাফিক পুলিশ সকাল ও বিকেলে মানুষের অফিসে যাওয়া-আসার সময়ে বাড়তি সক্রিয় থাকে। বাকি সময় থাকে ঢিলেঢালাভাব।

যানজট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বড় ধরনের সংস্কার দরকার। এই সংস্কার উন্নয়ন প্রকল্প নয়, বড় বিনিয়োগ করে নয়, সেটি করতে হবে ঢাকার পরিবহনব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সামছুল হক

ব্যয়ে আগ্রহ, ব্যবস্থাপনায় নয়

ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে বিশেষজ্ঞরা তিন দশক ধরে অযান্ত্রিক যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, পুরোনো ফিটনেসবিহীন যানবাহন তুলে দেওয়া, ব্যক্তিগত গাড়ি বাড়তে না দিয়ে বাসের সংখ্যা বাড়ানো এবং সমন্বিত পরিবহনব্যবস্থা চালুর পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু সরকার বেশি নজর দিয়েছে উড়ালসড়ক নির্মাণে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সামছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, যানজট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বড় ধরনের সংস্কার দরকার। এই সংস্কার উন্নয়ন প্রকল্প নয়, বড় বিনিয়োগ করে নয়, সেটি করতে হবে ঢাকার পরিবহনব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে।

সামছুল হক আরও বলেন, ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকে ঢাকার রাস্তায় যানবাহনের গড় গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার। এখন সেটি ৬ দশমিক ৭ কিলোমিটারে নেমেছে। একের পর এক উড়ালসড়ক নির্মাণ করে এখন নিচের যানজট ওপরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যা কখনো টেকসই সমাধান দিতে পারবে না।

যানজটের মাশুল দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকেই। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এক জরিপ প্রতিবেদন তুলে ধরে গত সেপ্টেম্বরে জানায়, ঢাকাবাসীকে সড়কে প্রতি ২ ঘণ্টায় ৪৬ মিনিট কাটাতে হয় যানজটে বসে।