সৈয়দ মোবারক ইতালিপ্রবাসী। ছুটিতে তিনি দেশে এসেছিলেন। এ মাসেই তাঁর ইতালি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে মারা গেছেন তিনি। শুধু মোবারকই নন, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও ছেলেরও প্রাণ গেছে আগুনে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন মোবারকের স্ত্রী স্বপ্না আক্তার, মেয়ে সৈয়দা তুজ জোহরা (১৯), আমিনা আক্তার (১৩) ও ছেলে আবদুল্লাহ (৮)।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মোবারকের মেয়ে আমিনার মরদেহের সামনে ভিড় করেছিলেন স্বজনেরা।
মোবারকের স্ত্রী স্বপ্না আক্তারের খালাতো বোন আয়েশা আক্তার বলেন, ঢাকা মেডিকেলের মর্গে চারজন এবং বার্ন হাসপাতালে একজনের মরদেহ রয়েছে। সবাইকে তাঁদের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহবাজপুরে দাফন করা হবে। ঢাকার মধুবাগে তাঁদের নিজস্ব ফ্ল্যাট রয়েছে।
আয়েশা আক্তার আরও বলেন, তাঁদের পরিবারে আর কেউ বেঁচে নেই। পাঁচজনের সবাই মারা গেলেন। মোবারক কিছুদিন পরে চলে যেতেন। তাই সবাই মিলে খেতে বের হয়েছিলেন। এক মেয়ের এসএসসি পরীক্ষা চলছিল। সবারই ভিসা প্রসেসিং হচ্ছিল ইতালি যাওয়ার জন্য।
কাঁদতে কাঁদতে স্বজনেরা বলছিলেন, ‘সব শেষ হয়ে গেল।’
রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে ভবনটিতে আগুন লাগে। আগুন নেভানোর পর হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।
গতকাল রাতে বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লেগেছে, সেটি সাততলা। ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামের খাবারের দোকান রয়েছে। তৃতীয় তলায় একটি পোশাকের দোকান ছাড়া ওপরের তলাগুলোতেও রয়েছে খাবারের দোকান। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে খাবারের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় হয়। অনেকেই পরিবার নিয়ে সেখানে খেতে যান।