রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী চর্যাপদ পুনর্জাগরণ উৎসব ২০২৪। আজ বুধবার বিকেলে উদ্যানের খোলা চত্বরে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহারে শিল্পীদের চর্যাপদের গান পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ উৎসব। সাধক ইউসুফ মিয়ার নেতৃত্বে ভাবনগরের সাধক শিল্পীরা আবহসংগীত পরিবেশন করেন দাঁড়িয়ে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক রেবেকা জে মানরিং। তিনি বলেন, ‘আমি আমেরিকার ইন্ডিয়ান ইউনিভার্সিটি ব্লুমিংটনে পড়াই। কিন্তু কোনো দিন চর্যাপদের গান শুনিনি। বাংলাদেশে ভাবনগর সাধুসঙ্গে এসে ভাবসাধকদের চর্যাপদের গান শুনে আমি অভিভূত।’
২০১৪ সাল থেকে প্রতি বুধবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়মিতভাবে ‘ভাবনগর সাধুসঙ্গ’ করে আসছে ভাবনগর ফাউন্ডেশন। চলতি মাসের ১ তারিখে সে আসরের ৫০০তম আসর পূর্তি হয়। এ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হচ্ছে চর্যাপদ পুনর্জাগরণ উৎসব ২০২৪।
ভাবনগর ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাইমন জাকারিয়া বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ সহিষ্ণু। তবে দিন দিন মানুষের গুণটি কমে যাচ্ছে। এই সহিষ্ণুতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব যদি সে তাঁর অতীত ইতিহাসের চর্চা করে। সেখানে রয়েছে “মানুষের জন্যই মানুষ”—এই মূল বাক্য। আমাদের সংস্কৃতির মূলে রয়েছে চর্যাপদ। তাই শুধু পাঠ্যবইয়ে নয়, আমাদের জীবনযাপনের অংশ হিসেবে চর্চার মধ্যে আনতে হবে চর্যাপদ।’
‘হাওয়া–দমের পথ বন্ধ কেন হয়/ কাহ্ন ভেবে আনমনা হয়ে রয়’ হাজার বছর আগের চর্যাপদের এই অনূদিত গান দিয়ে শেষ হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব। এরপর শিল্পীরা শোভাযাত্রা করে এখান থেকে জাতীয় শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে পৌঁছান। একাডেমির সেমিনারকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় চর্যাপদ পুনর্জাগরণ উৎসব ২০২৪।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন ৯ মে শিল্পকলা একাডেমিতে বিকেলে শুরু হবে চর্যাপদের পুনর্জাগরণ–বিষয়ক সেমিনার। চর্যানৃত্যের পুনর্জাগরণ নিয়ে রয়েছে প্রবন্ধ পাঠ। এরপর অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা অনুষ্ঠান। ১০ মে তৃতীয় দিন দুপুরে রয়েছে চর্যাপদ প্রশিক্ষণ কর্মশালা। ওই দিন সন্ধ্যায় চর্যাপদের পুনর্জাগরণ আসরের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তিন দিনের অনুষ্ঠান।