বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডিজইনফরমেশন বা কুতথ্যের (অপতথ্য) ঝুঁকি অনুধাবন ও উত্তরণের উপায় অনুসন্ধান নিয়ে দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকায়। ডিজআর্মিং ডিজইনফরমেশন বাংলাদেশ (ডিডিবি) ও ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইইডি) যৌথ উদ্যোগে আজ শনিবার আইইডি কার্যালয়ে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী এই কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ-স্কুলের শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার অধিকারকর্মী ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন আইইডির জ্যোতি চট্টোপাধ্যায় ও ডিডিবির পার্থিব মাহমুদ।
মূল বক্তৃতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও ডিডিবির সদস্য শান্তনু মজুমদার বলেন, কুতথ্য নতুন কিছু নয়। নতুন হচ্ছে ইন্টারনেট, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বদৌলতে কুতথ্যের ভোগ, উৎপাদন ও বিতরণ অতি সহজ হয়ে পড়া।
অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার আরও বলেন, কুতথ্যকে শুধু গুজব কিংবা শুধু অপপ্রচার দিয়ে দেখা ঠিক হবে না। আবার কুতথ্যকে শুধু ফ্যাক্ট-চেক দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টাতে কাজ হবে না। কুতথ্য ঠেকানোর জন্য সামাজিক-সাংস্কৃতিক পর্যায়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মুক্তবুদ্ধি ও বহুত্ববাদের প্রসারের কষ্টসাধ্য সক্রিয়তার ওপরে জোর দিতে হবে।
কর্মশালায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তচিন্তাবিরোধী কুতথ্যের উপস্থিতি নিয়ে বক্তব্য দেন গবেষক হাফিজ আদনান রিয়াদ।
সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে কুতথ্যের উপস্থিতি নিয়ে বক্তব্য দেন আইইডির তারিক হোসেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শরীফ নূরজাহান ও নড়াইল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক নূর এ আলম জাহিদ তাঁদের বক্তব্যে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ডিজিটাল জগতের কুতথ্য সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির উপায় নিয়ে কথা বলেন।
বিশ্বব্যাপী নির্বাচনে কুতথ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি নিয়ে বক্তব্য দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আকমল হোসাইন।
গবেষক রিতু চক্রবর্তী কুতথ্যের ব্যাপক বিস্তারে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো উদ্বেগ নিয়ে আলোকপাত করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও সংখ্যালঘুবিদ্বেষী কুতথ্য সম্পর্কে বক্তব্য দেন সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুদ্র জাতিসত্তাবিদ্বেষী কুতথ্যের বিষয়ে কথা বলেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অধিকারকর্মী হরেন্দ্রনাথ সিংহ। তরুণ সম্প্রদায়কে কুতথ্যবিরোধী সক্রিয়তায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে জোর দেন গবেষক সিয়াম সারোয়ার জামিল।
আলোচনা পর্ব শেষে আলোচক ও সাধারণ অংশগ্রহণকারীরা গ্রুপ-ওয়ার্ক ও মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।