জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ‘খাদ্যনিরাপত্তায় আমাদের একটি সফলতার গল্প আছে৷ বাংলাদেশ কৃষি ও শিল্পে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করতে পেরেছে৷’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হওয়া এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্য অধিকার ও কৃষি খাদ্যব্যবস্থা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন স্পিকার শিরীন শারমিন। আজ বুধবার সকালে উদ্বোধন হওয়া এই সম্মেলন শেষ হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার৷ দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্য অধিকারবিষয়ক আইনের কাঠামো, কৃষকদের অধিকার, কৃষিব্যবস্থার ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, পুষ্টিনিরাপত্তা, ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়া, দক্ষিণ এশিয়ায় সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা, খাদ্যোৎপাদন ব্যবস্থার আধুনিকায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে৷ বাংলাদেশ সরকার ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা ও বিদেশি আলোচকেরা বক্তব্য দেবেন৷
আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে খাদ্য অধিকার ও কৃষি খাদ্যব্যবস্থা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়৷ এরপর শুরু হয়েছে প্যানেল আলোচনা৷ এই সম্মেলনের আয়োজক খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ নামের একটি নেটওয়ার্ক৷ এই নেটওয়ার্কে দেশ-বিদেশের একগুচ্ছ সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান যুক্ত রয়েছে৷ আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্যানেল আলোচনার পর বেলা দেড়টায় সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সম্মেলন শেষ হবে৷
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তার অর্জনে আমি শ্রদ্ধা জানাই আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যাঁর বৈপ্লবিক পদক্ষেপের ফলে মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী ভঙ্গুর অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছিল৷ কৃষির পাশাপাশি অন্য বিষয়গুলোতে তিনি গুরুত্বারোপ করেছিলেন৷ বর্তমান সময়ে খাদ্যনিরাপত্তা ও কৃষি খাদ্যব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্যও এ ধরনের আলোচনার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে৷ সে ক্ষেত্রে এ ধরনের সম্মেলন বিষয়গুলো নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক৷’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সাম্প্রতিককালে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে খাদ্যনিরাপত্তায় ভালো করছি৷ সরকার সার, ভালো বীজের ব্যবস্থা করছে, যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হয়েছে, রাসায়নিক সার থেকে আমরা জৈব সারের দিকে যাচ্ছি৷ রাজনৈতিক বা অভ্যন্তরীণ নানা ধরনের টানাপোড়েনে আক্রান্ত না হলে এ ক্ষেত্রে আমরা সহজে কাবু হব না।
সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান৷ তিনি বলেন, খাদ্যের অধিকার একটি মৌলিক মানবাধিকার৷ এটি একটি বৈশ্বিক উদ্বেগের বিষয়৷ তাই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এর দিকে নজর দিয়েছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় এ ধরনের আলোচনা খুবই জরুরি৷
নেপালের কৃষি ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সঞ্জীব কুমার কর্ণ বলেন, ‘বৈশ্বিক খাদ্যনিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে৷ জাতিসংঘ ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়তে চাইছে৷ খাদ্যের অধিকার একটি মৌলিক মানবাধিকার৷ নেপাল একটি অংশগ্রহণমূলক, টেকসই ও সহনশীল খাদ্যব্যবস্থা চায়৷ নেপাল এ বিষয়ে সবার সঙ্গে মিলে কাজ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ৷ আশা করি, এই সম্মেলনের আলোচনা ফলপ্রসূ হবে এবং এটি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবে৷’
খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জামান আহমদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী পর্বে আরও বক্তব্য দেন বেসরকারি সংস্থা কেয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রমেশ সিং৷
খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক এবং ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।