দুই বছর পর শারদোৎসবে উচ্ছ্বসিত শিশুরা

নেচে-গেয়ে শারদোৎসব ১৪২৯ উদ্‌যাপন করছেন সুরের ধারার শিল্পীরা। শুক্রবার লালমাটিয়া মহিলা কলেজ মিলনায়তনে
ছবি: আশরাফুল আলম

‘শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি’—গাইতে গাইতে উৎসবস্থল মুখর করে তুলেছিল শিশুরা। করোনা মহামারির কারণে দুই বছর এই উৎসব আর প্রকৃতির সান্নিধ্য থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছিল। ঘরবন্দী সেই দিনগুলো পেছনে ফেলে আবারও তারা ফিরেছে। কণ্ঠেও সেই বার্তা—‘মেঘের কোলে রোদ হেসেছে বাদল গেছে টুটি।’

আজ শুক্রবার সকালে লালমাটিয়া মহিলা কলেজ মিলনায়তনে শারদোৎসব ১৪২৯ আয়োজন করে সংগীতশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘সুরের ধারা’। শরতের গান, গান ও ছড়াগানের সঙ্গে নেচে এ উৎসব উদ্‌যাপন করেছে সুরের ধারার শিশুশিল্পীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সুরের ধারার শিল্পী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্যে সুরের ধারার প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বলেন, ‘সুরের ধারা শুরু থেকেই শিশুদের নিয়ে কাজ করে আসছে। সুরের ধারা চায়, শিশুরা বাংলাদেশের সৌন্দর্যকে অনুধাবন করুক, উপলব্ধি করুক।’

রেজওয়ানা চৌধুরী আরও বলেন, ‘গত বছরগুলোয় করোনা মহামারির কারণে আমরা অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারিনি। এর মধ্যে আমাদের শিশুরা অনেকটা বড় হয়ে গেছে। পরিবেশ ও প্রকৃতির ওপর আমাদের যে নির্ভরতা, সেটা তাদের আমরা বোঝাতে চেয়েছি। এর ওপর ভিত্তি করে কিছু গান দিয়ে আজকের অনুষ্ঠান সাজিয়েছি।’

সমবেত কণ্ঠে শরতের গান গেয়ে শারদোৎসব ১৪২৯ উদ্‌যাপন করছেন সুরের ধারার শিল্পীরা। শুক্রবার লালমাটিয়া মহিলা কলেজ মিলনায়তনে

খোলা মাঠে শরৎ উৎসবের আয়োজন করতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বলেন, ‘বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় আমরা মিলনায়তনের ভেতরে উৎসবের আয়োজন করেছি। অবশ্য সকাল থেকেই দেখছি রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া। আগামী বছর আমরা খোলা মাঠে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করার চেষ্টা করব।’

মিলনায়তনের ভেতরে উৎসবের আয়োজন করা হলেও কাশফুল দিয়ে সাজানো হয়েছিল শারদোৎসবের মঞ্চ ও এর আশপাশ। নেচে-গেয়ে উদ্‌যাপন করেছেন শিল্পীরা। তাঁরা গেয়ে শুনিয়েছেন—‘দেখো দেখো, দেখো শুকতারা’, ‘শরৎ আলোর কমলবনে’, ‘অমল ধবল পালে লেগেছে মন্দ মধুর হাওয়া’, ‘আমারে ডাক দিল কে’, ‘শিউলিতলায় ভোরবেলায়’ এবং ‘তোমরা যা বলো তাই বলো’।

শারদোৎসবে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সুরের ধারার প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। শুক্রবার লালমাটিয়া মহিলা কলেজ মিলনায়তনে

শরতের বন্দনা করে সমবেত কণ্ঠে শিল্পীরা গেয়ে শোনান, ‘তোমার মোহন রূপে কে রয় ভুলে/জানি না কি মরণ নাচে, নাচে গো ওই চরণমূলে/শরৎ-আলোর আঁচল টুটে কিসের ঝলক নেচে উঠে’। এ ছাড়াও ছিল আবৃত্তি, একক গান ও নাচ, ছড়াবাদ্যে নাচ।