ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজানা মোসাদ্দিকা আত্মহত্যা করেননি। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন সহপাঠীরা। আজ রোববার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে এ দাবি করেন তাঁরা। মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘সানজানা হত্যার বিচার চাই’, ‘আত্মহত্যা নয়, হত্যা’ লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
সানজানার সহপাঠীরা বলেন, ‘একজন মানুষ ১২তলা থেকে পড়ে গেলে তার শরীর থেঁতলে যাওয়ার কথা। আমরা তার লাশ দেখেছি। তার শরীরে সে রকম কিছু হয়নি। সানজানার শরীরে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখার চিহ্ন ছিল। তাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।’
গতকাল শনিবার রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকা থেকে সানজানা মোসাদ্দিকার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সপ্তম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি ‘সুইসাইডাল নোট’ পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সানজানার বন্ধু আহমারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের অনেকেই সানজানার মরদেহ দেখেছে। ১২ তলা থেকে কেউ লাফিয়ে পড়লে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ ভেঙে যাওয়ার কথা। শরীরে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হওয়ার কথা। কিন্তু সানজানার তেমন কিছু হয়নি।’
সানজানার আরেক সহপাঠী অর্ণব দেব বলেন, সানজানার বাবা শাহিন ইসলাম দুটি বিয়ে করেছেন। শাহিন ইসলাম দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে আলাদা থাকতেন। সানজানা দুই ভাই–বোন নিয়ে তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। তাঁর বাবা মাঝেমধ্যে তাঁদের বাসায় এসে তাঁর মাকে মারধর করতেন। সানজানা বিভিন্ন সময়ে এর প্রতিবাদ করায় তাঁকেও মারধর করা হতো।
অর্ণব দেব আরও বলেন, গত ঈদের আগে সানজানার বাবা মেরে তাঁর হাতের আঙুল ভেঙে দেন। এ ঘটনায় থানায় জিডিও করেছিলেন তাঁর মা। আর কোনো দিন তাঁর গায়ে হাত তুলবে না, এমন আশ্বাস দেওয়ার পর ওই জিডি তুলে নেওয়া হয়।
অর্ণব দেব দাবি করেন, ‘সানজানার বাবা বিভিন্ন সময় তাকে মারধর করতেন বলে আমাদের অনেকের সঙ্গেই শেয়ার করেছে। সানজানার লাশ উদ্ধারের পর থেকে তার বাবা পলাতক। এতে বোঝা যায়, এ হত্যার পেছনে তার বাবা জড়িত রয়েছেন।’