প্রতিবেশীদের সঙ্গে বন্ধন দৃঢ় করতে বারিধারা এলাকায় পাড়া উৎসব করল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। এ উৎসবে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি মন্ত্রী, বিদেশি কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নিয়েছেন। এ আয়োজনে ছিল দেশীয় পিঠার স্টল, বায়োস্কোপ, পুতুলনাচ, ম্যাজিক শো, স্বাস্থ্যসেবা স্টল ও পাটের তৈরি পণ্যের প্রদর্শনী।
সেখানে আরও ছিল শিশুদের ছবি আঁকার ক্যানভাস ও রংতুলি, ক্যারমবোর্ড, টেবিল টেনিস, দাবাসহ নানা ধরনের খেলার সামগ্রী। পাশাপাশি স্ট্রিট ফুড, ট্যালেন্ট শো, স্ট্যান্ড-আপ কমেডি, পথনাটক, খেলাধুলা, মার্শাল আর্টসসহ নানা আয়োজন।
সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় করতে আয়োজিত এ উৎসব শুক্রবার বেলা ১১টায় বারিধারার কূটনৈতিক এলাকার ৩ নম্বর সড়কে শুরু হয়ে শেষ হয় সন্ধ্যা ৭টায়। পূর্বঘোষিত এ উৎসব সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল।
এ উৎসবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুক, ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল অসান জুনিয়র, ব্রুনাই দারুসসালামের রাষ্ট্রদূত হাজি হারিস বিন ওথমান, জাপান দূতাবাসের মন্ত্রী (ডিসিএম) মাচিদা তাৎসুয়া, লিবিয়া দূতাবাসের মিনিস্টার প্লেনিপটেনশিয়ারি আবদালফাত্তাহ খিতরেশ, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকার হেড অব স্কুল জন স্মিথিসসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
পাড়া উৎসব উদ্বোধনের পর ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ঢাকঢোল বাজাতে বাজাতে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুককে ডেকে নেন। পরে মেয়র ‘সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী’ গানটি শুরু করেন এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনারও অনুরোধে বাংলার এই জনপ্রিয় গানে গলা মেলান।
পরে মেয়র ডেকে নেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মাকে। কাছে ডেকে নিয়ে ঢাকঢোলের তালে শুরু করেন ‘চুমকি চলেছে একা পথে, সঙ্গী হলে দোষ কি তাতে...।’ মেয়রের সঙ্গে গানটি গেয়ে শোনান ভারতীয় হাইকমিশনার। এ ছাড়াও মেয়রের সঙ্গে গান গেয়ে শোনান ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল অসান জুনিয়র। পরে মেয়র ব্রুনাই দারুসসালামের রাষ্ট্রদূত হাজি হারিস বিন ওথমানের সঙ্গে টেবিল টেনিস খেলেন। এভাবেই ডিএনসিসি মেয়র উৎসবে আগত স্থানীয় বাসিন্দা এবং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘শহরে দেখা যায়, প্রতিবেশীরা এক ভবনে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেও কেউ কাউকে সেভাবে চেনেন না। নিজেদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ নেই। তাই সবার সঙ্গে পরিচিত হতে এবং সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে এই পাড়া উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।’
বারিধারা সোসাইটির বাসিন্দাদের উদ্দেশে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র বলেন, ‘বারিধারা লেকের পানি দূষিত হয়ে গেছে। সেখানে আমরা মাছের চাষ করতে পারছি না। মশার চাষ হচ্ছে। বেশির ভাগ বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সিটি করপোরেশনের সারফেস ড্রেনে দিয়ে রেখেছে। আমি অভিযান করেছিলাম, কলাগাছ ঢুকিয়ে অবৈধ সংযোগ বন্ধ করেছিলাম। সবাইকে বলছি, দয়া করে পয়োবর্জ্যের সংযোগ আমাদের সারফেস ড্রেনে দেবেন না। সারফেস ড্রেন বৃষ্টির পানি ও কিচেন ওয়াটার প্রবাহের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে।’
‘হিরোজ ফর অল’–এর প্রতিষ্ঠাতা রেহনুমা করিমের সঞ্চালনায় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যদের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জাকির হোসেন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর হাছিনা বারী চৌধুরী, বারিধারা সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ফিরোজ এম হাসান প্রমুখ।