পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। কর্মসূচি চলাকালে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা নগর ভবনের ভেতরে গিয়ে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী ও সচিবের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা বলছেন, রাজধানী বংশালের আগা সাদেক রোডের মিরনজিল্লা এলাকায় ব্রিটিশ আমল থেকেই হরিজন সম্প্রদায়ের লোকেরা বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি তাঁরা জানতে পেরেছেন, তাঁদের সেখান থেকে উচ্ছেদ করা হবে। পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদের ঘোষণার প্রতিবাদে তাঁরা মিরনজিল্লা এলাকায় সমাবেশ করেছেন। পরে আগা সাদেক রোড থেকে মিছিল নিয়ে নগর ভবনে এসেছেন। মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস দেশে না থাকায় তাঁদের প্রতিনিধিরা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানের সঙ্গে দেখা করে কথা বলে এসেছেন।
হরিজন সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে মনীন্দ্রনাথ যুগ্ম, কৃষ্ণ লাল, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে গিয়ে কথা বলেছেন।
সেখান থেকে বেরিয়ে রানা দাশগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, সরকারি দল এবার যে নির্বাচনী ইশতেহার করেছে, সেখানে যেসব অঙ্গীকার তাতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছিল, অনগ্রসর হরিজন ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্য শিক্ষা ও তাঁদের বাসস্থানের মতো বিষয়ের উন্নতিতে সরকার অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করবে। এটা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের মনে করিয়ে দিয়েছি। তাঁদের আরও বলেছি, পুনর্বাসন না করে কাউকে উচ্ছেদ করা আইনবিরুদ্ধ। আপনারা তাদের আগে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেন।’
মিরনজিল্লা এলাকায় হরিজন সম্প্রদায়ের ১৮০টি পরিবার বসবাস করে। এসব পরিবারের কিছু সদস্য সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন।
জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মুনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, মিরনজিল্লা এলাকায় যাঁরা বৈধ তথা সিটি করপোরেশনের নীতিমালা অনুযায়ী কর্মচারী, তাঁদের নতুন ভবনে বাসা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে অবৈধভাবে সেখানে অনেকে বসবাস করেন। অবৈধভাবে যাঁরা বসবাস করছেন, তাঁদের উচ্ছেদ করতে সিটি করপোরেশন থেকে তাঁদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন সিটি করপোরেশনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন।
সাক্ষাতের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মুখপাত্র ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের প্রথম আলোকে বলেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতাদের কথা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা শুনেছেন। তাঁরা বিষয়টি মেয়রকে অবহিত করবেন। এরপর নতুন কোনো সিদ্ধান্ত আসলে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।