পান্থকুঞ্জে এক্সপ্রেসওয়ের র‌্যাম্প নামানোর সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ১১ দিন ধরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন তাঁরা। আজ সোমবার দুপুরে সেখানে যান অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
পান্থকুঞ্জে এক্সপ্রেসওয়ের র‌্যাম্প নামানোর সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ১১ দিন ধরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন তাঁরা। আজ সোমবার দুপুরে সেখানে যান অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

এক্সপ্রেসওয়ের র‌্যাম্প

পান্থকুঞ্জে এলেন তিন উপদেষ্টা, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশ্বাস

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের র‍্যাম্প পান্থকুঞ্জ পার্ক দিয়ে নামবে কি না, সে বিষয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আজ সোমবার দুপুরের পর পান্থকুঞ্জে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলার পর তিনি এ কথা জানিয়েছেন। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আগামী বৃহস্পতিবার সব পক্ষকে নিয়ে একটি সভা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কারওয়ান বাজার থেকে পলাশী পর্যন্ত অংশ নির্মাণ বাতিলের দাবিতে ১১ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশের পরিবেশ সচেতন নাগরিক ও বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন’।

আজ সোমবার দুপুরের পর পান্থকুঞ্জ পরিদর্শনে আসেন অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। এ সময় আন্দোলনকারীরা পান্থকুঞ্জ পার্কে র‍্যাম্প নামানোর সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। আন্দোলনকারীদের অনড় সিদ্ধান্তে মনঃক্ষুণ্ন হয়ে উপদেষ্টা ফাওয়াজুল কবির খান গাড়িতে উঠে ঘটনাস্থল থেকে চলে যেতে চান। পরে কয়েকজন আন্দোলনকারী তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরেন। উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান ও আদিলুর রহমান আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেন। আন্দোলনকারীরা সেটি মেনে নেওয়ার পর তিন উপদেষ্টা সেখান থেকে চলে যান।

পান্থকুঞ্জে এক্সপ্রেসওয়ের র‌্যাম্প নামানোর সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ১১ দিন ধরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন তাঁরা। আজ সোমবার দুপুরে সেখানে যান অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান

ঘটনাস্থল ত্যাগ করার আগে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পান্থকুঞ্জ নিয়ে দাবিটা হচ্ছে, এখানে কোনোভাবেই র‍্যাম্প নামানো যাবে না। সেতু বিভাগের বক্তব্য হচ্ছে, এখানে আসলে কোনো র‍্যাম্প নামবে না। এখানে যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁদের দাবিটা হচ্ছে, এই এলাকায় তো আর কোনো সবুজ নেই। তো পাবলিকের সবুজটুকু কেড়ে নিয়ে কেন র‍্যাম্প নামাতে হবে। সরকারের বক্তব্য হচ্ছে, যেহেতু চুক্তিটা আগেই হয়ে গেছে এবং যেখানে টাকাপয়সা পাওয়ার কথা, সেখানে উল্টো টাকা গুনতে হচ্ছে। এখানে আমাদের অন্য কোনো বিকল্প আছে কি না, বৃহস্পতিবার সবাইকে নিয়ে আলোচনা করে ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানও আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব প্রথম আলোকে বলেন, আলোচনার আশ্বাস তাঁরা পেয়েছেন। এখন আলোচনা চলবে। তবে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তাঁরা অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন না।

এদিকে আন্দোলনকারীরা ফার্মগেটের আনোয়ারা পার্কটি রক্ষার দাবি জানিয়ে আসছেন। পান্থকুঞ্জে আসার আগে উপদেষ্টারা আনোয়ারা পার্কও পরিদর্শন করেছেন। আনোয়ারা পার্কের বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আনোয়ারা পার্কে আমরা যা দেখে এসেছি, ওইখানে মেট্রোর অনেকটা জায়গা অকুপাই করে রাখা হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত দিয়ে দেওয়া হয়েছে যে পুরো পার্কটাকে খালি করে দেওয়া হবে। এই পার্কে সবুজ কেমন করে ফিরিয়ে আনা হবে, তার জন্য ওপেন ডিজাইন আহ্বান করা হবে। এই ডিজাইন আপনাদের (আন্দোলনকারী) সঙ্গে শেয়ার করা হবে।’