বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপজনিত বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের প্রকোপ এবং মৃত্যু ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা এ ক্ষেত্রে কার্যকর এবং ব্যয়সাশ্রয়ী পদক্ষেপ হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পারে।
‘উচ্চ রক্তচাপজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন জনস্বাস্থ্য ও হৃদ্রোগবিশেষজ্ঞরা। অ্যাডভোকেসি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আজ বৃহস্পতিবার এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে। এতে সহযোগিতা করেছে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বলে প্রজ্ঞার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ওয়েবিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজনের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের সব জনগোষ্ঠীকে উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে এবং এ জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
ওয়েবিনারে কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ সাপোর্ট ট্রাস্টের সহসভাপতি ডা. মাখদুমা নার্গিস বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি রয়েছে। কমিউনিটি বেজড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) আওতাধীন বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামত নিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধের তালিকায় উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব। তবে কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রশিক্ষিত লোকবল নিশ্চিত এবং তাদের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক এস এম মোস্তফা জামান জানান, ‘সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপার ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং রোগীদের ওষুধের পাশাপাশি মোটিভেশন দিতে হবে। একই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান উদ্যোগগুলো সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে এই সংকট থেকে দ্রুত উত্তরণ সম্ভব হবে।’
ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের হাইপারটেনশন কন্ট্রোল প্রোগ্রামের ম্যানেজার ডা. শামীম জুবায়ের এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞার কো–অর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ এই ওয়েবিনারে অংশ নেন।