বাংলাদেশের ‘আয়রনম্যান’ শামসুজ্জামান আরাফাত বলেছেন, ‘বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন’ শিশুরাও সমাজের সম্পদ। উপযুক্ত পরিচর্যা ও প্রশিক্ষণ পেলে এরা দেশ ও জাতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। ২৬ অক্টোবর মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠেয় আয়রনম্যান প্রতিযোগিতায় যাওয়ার আগে শনিবার আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান আরাফাত বলেন, ‘আমি গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ব্র্যাকের নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিজঅ্যাবিলিটি সেন্টার (এনডিডি) ঘুরে এসেছি। সেখানে ৩৫ জন শিশুর সঙ্গে কিছু সময় কাটিয়ে আমার উপলব্ধি হয়েছে, এই শিশুদের কল্যাণের জন্য আমাদের যার যার অবস্থান থেকে যথাসাধ্য কাজ করে যেতে হবে।’
ব্র্যাকের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় প্রেসক্লাবে ব্র্যাক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির লিমিয়া দেওয়ান, অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেঞ্জ প্রোগ্রামের শেহরিন আহসানসহ অন্য কর্মকর্তারা। মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে আরাফাত ‘বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন’ শিশুদের জন্য তহবিল গঠনে সহায়তা করবেন বলেও জানানো হয়।
আয়োজকেরা জানান, ২০০১ সাল থেকে ব্র্যাকের স্কুলগুলোতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের ভর্তি করা হচ্ছে। বর্তমানে সারা দেশে ব্র্যাকের স্কুলগুলোতে ৪০ হাজার বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু পড়াশোনা করছে। এ ছাড়া সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে ব্র্যাকের ১১টি সেন্টারে তাঁদের পড়ানো হচ্ছে। শুধু তা–ই নয়, কর্মক্ষেত্রে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ‘জব ফেয়ারের’ মাধ্যমে বাছাই করা ৪০২ জনের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ১৪৪ জনকে এরই মধ্যে চাকরির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির লিমিয়া দেওয়ান বলেন, ব্র্যাক এডুকেশন প্রোগ্রাম সব সময়ই ‘বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন’ শিশুদের প্রতি সংবেদনশীল। সারা দেশে ব্র্যাকের ১১টি এনডিডি সেন্টারে পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিজস্ব কারিগরি দক্ষতার বিকাশ ঘটাতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেঞ্জ প্রোগ্রামের শেহরিন আহসান বলেন, ‘বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের উপযোগী কর্মক্ষেত্র তৈরিতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আমরা কথা বলে যাচ্ছি। তারই ধারাবাহিকতায় ব্র্যাকের অফিসগুলো “ডিজঅ্যাবলড ফ্রেন্ডলি” করার প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে ব্র্যাকের ওয়েবসাইটটিও প্রতিবন্ধীবান্ধব করা হয়েছে।’
শামসুজ্জামান আরাফাত আয়রনম্যান খেতাব জেতেন মালয়েশিয়ায় ২০১৭ সালে। দ্বিতীয়বারের মতো এই খেতাব জেতার জন্য ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ফ্রাঙ্কফুর্ট ২০১৯–এ ৩.৮ কিলোমিটার সাঁতার, ১৮৫ কিলোমিটার সাইক্লিং এবং প্রায় ৪২ কিলোমিটারের একটি পূর্ণ ম্যারাথন সম্পন্ন করেন মাত্র ১২ ঘণ্টা ১৪ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডে।