>
- সম্প্রতি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ১০০ এলাকায় জরিপকাজ চালানো হয়।
- গত বছরের মার্চ-এপ্রিল মাস থেকেই ঢাকার ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে চিকুনগুনিয়া।
- চলতি বছরে গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরজুড়ে বেড়েছে মশার দাপট।
- মানুষের মনে ফিরিয়ে এসেছে ভয়জাগানিয়া চিকুনগুনিয়ার আতঙ্ক।
রাজধানীর ১৯টি এলাকাকে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া বিস্তারের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা পরিচালিত একটি জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করা হয়। গত মঙ্গলবার এই জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গুর বিস্তার প্রতিরোধে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোকে এখনই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো হলো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) বনানী, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, গাবতলী, মগবাজার, মালিবাগের একাংশ, মিরপুর-১, মহাখালী ডিওএইচএস, নাখালপাড়া, পূর্ব শেওড়াপাড়া, টোলারবাগ ও উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টর। আর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে ধানমন্ডি ১, এলিফ্যান্ট রোড, গুলবাগ, কলাবাগান, মেরাদিয়া, মিন্টো রোড ও বেইলি রোড এবং শান্তিনগর।
অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, সম্প্রতি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৯৩টি ওয়ার্ডের ১০০টি এলাকায় এই জরিপকাজ চালানো হয়। এর মধ্যে ডিএনসিসির ৪১টি ও ডিএসসিসির ৫৯টি এলাকা পরিদর্শন করেন জরিপকারীরা। জরিপে দেখা যায়, ১৯টি এলাকায় চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার ঘনত্ব অন্য এলাকার চেয়ে বেশি।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক সানিয়া তাহমিনা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই শুষ্ক মৌসুমে এডিস মশার অস্তিত্ব সেভাবে থাকার কথা নয়। এটা তাদের প্রজনন মৌসুমও নয়। কিন্তু এই এলাকাগুলোতে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি এডিস মশার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এগুলোর প্রজনন প্রক্রিয়াও নজরে এসেছে। বর্ষা মৌসুম এলে স্বাভাবিকভাবেই এর প্রকোপ বাড়বে।’
অধ্যাপক তাহমিনা আরও বলেন, ‘এখন যে মশাগুলো উৎপাত করছে, সেগুলো কিউলেক্স মশা। এগুলো সাধারণত মারাত্মক কোনো রোগ ছড়ায় না। তবে জরিপে মৌসুম ছাড়াই এডিস মশা বিচরণের যে চিত্র আমরা পেয়েছি, তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক।’
গত বছরের মার্চ-এপ্রিল মাস থেকেই ঢাকার ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে চিকুনগুনিয়া। চলতি বছরে গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরজুড়ে বেড়েছে মশার দাপট। যা মানুষের মনে ফিরিয়ে এসেছে ভয়জাগানিয়া চিকুনগুনিয়ার আতঙ্ক।
এ বিষয়ে সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার এম এম আকতারুজ্জামান বলেন, এডিস মশা সাধারণত পরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়ে। তাই ঘরে থেকেই এই মশার বিস্তার বেশি হয়। গত বছরের মতো পরিস্থিতি যেন আবারও তৈরি না হয়, সে জন্য এখন থেকেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
কর্মকর্তারা বলেন, জরিপ প্রতিবেদনে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলোতে এখন থেকেই সিটি করপোরেশনের মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম অধিকতর জোরদার করার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তোলার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।