আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আরও দুই মামলায় ৪ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পল্লবী থানায় করা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন আইনে এবং প্রতারণার অভিযোগে করা দুটি মামলায় তাঁর এই রিমান্ড মঞ্জুর হয়। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ আদেশ দেন।
গুলশান থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে আজ মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় পল্লবী থানার পুলিশ তাঁকে ওই দুই মামলায় ৭ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে।
প্রতারণার অভিযোগে হেলেনা জাহাঙ্গীরের নামে পল্লবী থানায় গতকাল সোমবার বিকেলে আবদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলার এজাহারে আবদুর রহমান দাবি করেন, হেলেনা জাহাঙ্গীর তাঁর মালিকানাধীন ‘জয়যাত্রা টেলিভিশনে’ ভোলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়ার নামে ৫৪ হাজার টাকা নিয়েছেন। তিনি জয়যাত্রা টেলিভিশনে কয়েক মাস কাজ করেছেন। প্রতি মাসে তাঁর কাছ থেকে তিন হাজার টাকা করে নিত ‘জয়যাত্রা টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ’।
এ ছাড়া হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনেও মামলা রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশানের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। প্রায় সোয়া চার ঘণ্টার অভিযানে ওই বাসা থেকে বিদেশি মদ, বিদেশি মুদ্রা, হরিণ ও ক্যাঙারুর চামড়া, ক্যাসিনোর সরঞ্জাম ও ওয়াকিটকি সেট উদ্ধার করা হয়। রাত সোয়া ১২টার দিকে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটক করে র্যাবের সদর দপ্তরে নেওয়া হয়। এরপর রাত দুইটার দিকে র্যাবের একটি দল মিরপুরে হেলেনা জাহাঙ্গীরের মালিকানাধীন জয়যাত্রা টেলিভিশন ও জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন ভবনে অভিযান চালায়। রাতভর ওই অভিযান চলে।
পরে র্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হেলেনা জাহাঙ্গীর স্বীকার করেছেন, তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মানহানি ও সুনাম নষ্ট করেছেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই আইপি টিভি চ্যানেল পরিচালনা করছিলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। তিনি জেলায় জেলায় প্রতিনিধি নিয়োগের নামে চাঁদাবাজি করেছেন।