রাজধানীর ভাটারা এলাকায় সাফায়েত মাহবুব ফারাইজি নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনারসহ (এসি) আটজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন নিহত সাফায়েতের মা শামিমুন নাহার। আগামী ৯ মার্চের মধ্যে তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী সারোয়ার হোসেন।
আজ বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিব বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন বাড্ডা জোনের এসি তয়াছের জাহান, ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মশিউর রহমান, ভুক্তভোগী সাফায়াতের বান্ধবী সুজানা তাবাসসুম সালাম, তাঁর সহযোগী আফতাব, শাখাওয়াত, আসওয়াদ, বাড়ির মালিক কামরুল হক ও বাড়ির ব্যবস্থাপক রিপন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সারোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সাফায়েত আমেরিকায় থাকতেন। তিনি সেখানকার নাগরিকত্বও পেয়েছিলেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি দেশে ফেরেন। পরে বান্ধবী সুজানা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে তাঁদের রামপুরার বাসায় আসতেন। অন্য বন্ধুরাও আসতেন। সবাই মিলে সাফায়েতের বাসায় নেশা করতেন। এসব তথ্য জানার পর সাফায়েতের মা শামিমুন নাহার সুজানাসহ অন্যদের বাসায় আসতে নিষেধ করেন। পরে সুজানাসহ অন্য আসামিরা সাফায়েতের মাকে মারধর করেন। ২৩ নভেম্বর শামিমুন ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়।
মামলার আরজিতে দাবি করা হয়, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর সাফায়েত তাঁর মাকে নিয়ে গুলশান গেলে সেদিন আসামিরা মারধর করেন। পরে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরলে সেদিন বাড্ডা জোনের এসি তয়াছের সুজানাকে নিয়ে ভুক্তভোগীর বাসায় আসেন। সুজানার সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে চাপ দেন তয়াছের ও এসআই মশিউর।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সারোয়ার দাবি করেন, গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর সাফায়েত বাসা থেকে বের হন। রাত ১২টার দিকে বাসায় ফেরেন। তখন তাঁর সঙ্গে বান্ধবী সুজানাসহ অন্য আসামিরা ছিলেন। সাফায়েতের মা সুজানাসহ অন্যদের বাসা থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। তখন সাফায়েত সুজানাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য বের হন। এরপর আর তিনি বাসায় ফেরেনি। ২৭ ডিসেম্বর ভাটারা থানা থেকে ফোন করে শামিমুন নাহারকে সাফায়েতের লাশ উদ্ধারের খবর জানানো হয়।
সারোয়ার আরও বলেন, ভাটারার যে বাসা থেকে সাফায়েতের লাশ উদ্ধার হয়, সেখানে যান বাদী শামিমুন নাহার। তখন বাড়ির মালিক কিংবা ব্যবস্থাপক কেউ তাঁকে ঢুকতে দেননি। থানায় মামলা করতে গেলেও এসি তয়াছের ও এসআই মশিউর হুমকি দেন।