বিশিষ্ট সাংবাদিক ও প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক মো. শাহ আলমগীরের দাফন সম্পন্ন হবে উত্তরায়। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬২ বছর।
আজ বেলা দেড়টার দিকে প্রথমে রাজধানীর গোড়ানে পৈতৃক বাসভবনে তাঁর মরদেহ নেওয়া হবে। সেখানে প্রথম জানাজা হবে। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে তাঁর কর্মক্ষেত্র পিআইবিতে দ্বিতীয় জানাজা হবে। বেলা ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে তাঁর তৃতীয় জানাজার পর বিকেল ৪টায় উত্তরা ১১ নম্বরের সেক্টরের মসজিদে তাঁর চতুর্থ জানাজা হবে। এরপর বিকেল ৫টায় উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হবে।
শাহ আলমগীর ২০১৩ সালের ৭ জুলাই পিআইবির মহাপরিচালক হিসেবে যোগ দেন। সরকার ২০১৮ সালের জুলাই মাসে তাঁর চাকরির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ায়।
পারিবারিক জীবনে শাহ আলমগীর এক পুত্র ও কন্যাসন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রী ফৌজিয়া বেগম একটি ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করেন। ছেলে আশিকুল আলম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে বিবিএ পাস করে কাজ করছেন এইচএসবিসি ব্যাংকে। মেয়ে অর্চি অনন্যা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইইউবিতে সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরে থাকতেন তিনি।
উপমহাদেশের প্রথম শিশু-কিশোর পত্রিকা সাপ্তাহিক কিশোর বাংলা পত্রিকায় যোগ দেওয়ার মাধ্যমে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন। এখানে তিনি ১৯৮০ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত সহসম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। এরপর তিনি কাজ করেন দৈনিক জনতা, বাংলার বাণী, আজাদ ও সংবাদ-এ। প্রথম আলো প্রকাশের সময় থেকেই তিনি পত্রিকাটির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং ১৯৯৮ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত যুগ্ম বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি চ্যানেল আইয়ের প্রধান বার্তা সম্পাদক, একুশে টেলিভিশনে হেড অব নিউজ, যমুনা টেলিভিশনে পরিচালক (বার্তা) এবং মাছরাঙা টেলিভিশনে বার্তা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
শাহ আলমগীর ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ‘কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ সাহিত্য পুরস্কার ২০০৬, ‘চন্দ্রাবতী স্বর্ণপদক ২০০৫ ’, ‘রোটারি ঢাকা সাউথ ভোকেশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০০৪’ এবং ‘কুমিল্লা যুব সমিতি অ্যাওয়ার্ড ২০০৪’ পেয়েছেন।
শাহ আলমগীরের পৈতৃক বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে হলেও বাবার চাকরির সূত্রে জীবনের বড় একটি সময় বৃহত্তর ময়মনসিংহে কাটে তাঁর। ময়মনসিংহের গৌরীপুর কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাংলা সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স করেন।