ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী সমিতির টাকা আত্মসাৎকারীদের শাস্তি এবং ওয়াসার বিদ্যমান জনবল কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) পরিবর্তনের পদক্ষেপ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজ মঙ্গলবার এক মানববন্ধনে তাঁরা অভিযোগ করেন, কর্মচারী সমিতির ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা ওয়াসা প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তবে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বলছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিষয়ে তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ঢাকা ওয়াসা ভবনের সামনে আজ দুপুরে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী সমিতি এবং ঢাকা ওয়াসা কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
সম্প্রতি ঢাকা ওয়াসার কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় সমিতির শীর্ষ পদে ছিলেন। সমবায় অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।
মানববন্ধনে সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সরকার বলেন, যাঁরা দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন, তাঁদের বরখাস্ত-বহিষ্কার করা হচ্ছে। কিন্তু যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা বহাল তবিয়তে আছেন। কর্মচারী সমিতির প্রায় ২০০ কোটি টাকার সম্পদ ওয়াসা কর্তৃপক্ষ দখলে রেখেছে। সমিতিকে এ সম্পদ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
ঢাকা ওয়াসাকে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান কর্তৃপক্ষ। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে জনবল কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হবে। এটি করা হলে স্থায়ী জনবলের সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে। বিষয়টি নিয়ে ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।
মানববন্ধনে বিদ্যমান জনবল কাঠামো পরিবর্তনের পদক্ষেপ থেকে সরে আসার দাবি জানান ওয়াসার কর্মীরা। জনবল কাঠামো পরিবর্তনের নামে কর্মী ছাঁটাই বন্ধ করা এবং বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থা চালু রাখারও দাবি জানান তাঁরা।
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন। কর্মীদের মানববন্ধনের বিষয়ে পরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ওয়াসার পরিচালক (উন্নয়ন) আবুল কাশেম। তিনি দাবি করেন, সমবায় সমিতির কারণে কাউকে বরখাস্ত করা হয়নি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ওয়াসা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ওয়াসার জিরো টলারেন্স অবস্থান। সমিতির অর্থ আত্মাসাতের বিষয়ে ওয়াসা তদন্তের উদ্যোগ নিচ্ছে। সমিতির হিসাব নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলছে। বিচারাধীন বিষয়ে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
আবুল কাশেম আরও বলেন, ঢাকা ওয়াসার কার্যক্রমকে আরও আধুনিক ও সময়োপযোগী করতে বিদ্যমান জনবল কাঠামো বদলানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন কাঠামোয় বর্তমান কর্মীদের কাউকে ছাঁটাই করা হবে না।