বিয়ের ক্ষেত্রে বয়স নিয়ে সন্দেহ হলে বর-কনের জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মসনদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সনদ দেখে বয়স নির্ধারণ করতে হবে। এসব যাচাই করে বয়স সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই বিয়ের নিবন্ধন করতে হবে। এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে দেশের নিকাহ রেজিস্ট্রারদের (কাজি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
এক আসামির জামিন আবেদনের শুনানিতে বয়স বেশি দেখিয়ে কিশোরীর বিয়ের নিবন্ধনের বিষয়টি নজরে এলে এ আদেশ দেওয়া হয়।
ফেনীর সোনাগাজীর এক কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগে তার বাবা গত বছরের অক্টোবরে জাহিদুল ইসলাম ওরফে জাবেদসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা ওই মামলায় জাহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ মামলায় হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন জাহিদুল। এর শুনানিতে আসামি জাহিদুলের আইনজীবী জানান ওই কিশোরীর সঙ্গে জাহিদুলের বিয়ে হয়েছে, যেখানে মেয়েটির জন্মতারিখ ২০০২ সাল উল্লেখ আছে।
রাষ্ট্রপক্ষের তথ্যমতে, মামলার এজাহার অনুসারে মেয়েটির বয়স ১৫ বছর। বিষয়টি নজরে এলে ৭ মার্চ হাইকোর্ট ফেনী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাজি সিরাজুল ইসলাম মজুমদারকে তলব করেন। বয়স বেশি দেখিয়ে কিশোরীর বিয়ের নিবন্ধনের প্রেক্ষাপটে বিয়ে–সংক্রান্ত সব কাগজপত্র, রেজিস্ট্রার ভলিউমসহ ওই নিকাহ রেজিস্ট্রার, তথা কাজিকে ১৬ মার্চ আদালতে হাজির হতে বলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার সিরাজুল আদালতে হাজির হন।
আদালতে আসামি জাহিদুলের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শাহ এমরান। রাষ্ট্রপক্ষ শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
পরে আদেশের বিষয়টি জানিয়ে মো. সারওয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বয়স বেশি দেখিয়ে নিবন্ধন করায় সিরাজুল ইসলাম আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
আদালত তাঁকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। ওই বিয়ে নিবন্ধনের ঘটনায় কাজি সিরাজুলের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে ফেনীর জেলা রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আসামি জাহিদুলকে জামিন দিয়েছেন আদালত।