রাত ৯টার পর গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে: তিতাস

গ্যাস না থাকায় চুলা জ্বলেনি বলে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ধানমন্ডির সুলতানস ডাইনে ছিল এমন ভিড়
ছবি: প্রথম আলো

পাইপলাইন মেরামত শেষে রাতের মধ্যেই রাজধানীর পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করার আশা দিয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

তিতাস গ্যাস বিতরণকারী কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী ইকবাল মো. নুরুল্লাহ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, উচ্চ চাপের বড় পাইপলাইনটি ঠিক থাকায় আধা ঘণ্টা আগে তা খুলে দেওয়া হয়েছে। এক ঘণ্টার মধ্যে গ্যাসের সরবরাহ বাড়তে শুরু করবে। আর ছোট পাইপলাইনে লিকেজ ধরা পড়ায়, তা মেরামতে কাজ শুরু হয়েছে। সব মিলে আড়াই ঘণ্টা লাগতে পারে। এরপর সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

গ্যাস না থাকায় চুলা জ্বলেনি বলে আজ মঙ্গলবার কলাবাগানের গলির মুখে খাবার দোকান থেকে খাবার কিনতে হয় অনেককে

লিকেজ মেরামত হচ্ছিল যে স্থানে, সেখান থেকে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলছিলেন তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি জানান, ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত উন্নয়নকাজ বন্ধ থাকার কথা। এর মধ্যেই তিতাসকে না জানিয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ কাজ করেছে। লিকেজে কোনোভাবে আগুনের সূত্রপাত হলে বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারত। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে, আজ রাত নয়টার পর গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে।

এর আগে ঢাকার আমিনবাজার এলাকায় সওজের উন্নয়নকাজের কারণে তিতাসের গ্যাস পাইপলাইনে লিকেজ বা ছিদ্র দেখা দেয়। বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হওয়ায় ওই পাইপলাইনে গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে রাজধানী ঢাকা ও সাভারের বেশ কিছু এলাকার মানুষ দিনভর চুলা জ্বালাতে পারেননি।

এ ঘটনায় গ্রাহকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে তিতাস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সওজের কাজে তিতাসের পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, মিরপুর, গ্রিন রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের সরবরাহ বিঘ্নিত হয়।

এদিকে দিনভর গ্যাস না থাকায় বিপাকে পড়েন রাজধানীর বেশ কিছু এলাকার মানুষ। দিনভর যেসব এলাকায় গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক ছিল না বা একেবারেই গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ ছিল, সেসব এলাকার বাসিন্দারা বিভিন্ন রেস্তোরাঁ থেকে খাবার সংগ্রহ করেন। এতে স্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে হঠাৎই ক্রেতার চাপ বেড়ে যায়। খাবার সরবরাহ করতে হিমশিম খান ব্যবসায়ীরা।

গ্যাস না থাকায় চুলা জ্বলেনি বলে আজ মঙ্গলবার দুপুরে মিরপুরের খাবার দোকানে ছিল ক্রেতার চাপ

আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে মিরপুর ১ নম্বরের শাহ আলী মার্কেটে মায়ের দোয়া বিরিয়ানি হাউসে গিয়ে মানুষের অনেক ভিড় দেখা যায়। কোনো রকমে দোকানের ভেতর ঢোকার পর বিক্রেতা মোহাম্মদ হোসেন বলেন, দুপুর ১২টার পর মানুষের চাপ শুরু হয়েছে। সেই থেকে একমুহূর্তের জন্য বিরাম নেই। ইতিমধ্যে বড় চারটি হাঁড়ির বিরিয়ানি বিক্রি করেছেন। অন্য সময় দুই ঘণ্টায় এক থেকে দেড় হাঁড়ির বিরিয়ানি বিক্রি হয়।

মায়ের দোয়া বিরিয়ানি হাউস থেকে চার প্যাকেট তেহারি কিনে ফিরছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আবুল খায়ের। থামিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকাল থেকে বাসায় গ্যাস নেই। স্ত্রী ফোন করে খাবার নিয়ে যেতে বলেছেন। তাই দোকান বন্ধ রেখে তিনি বাসায় ফিরছেন।

অনলাইনে অ্যাপের মাধ্যমে খাবারের অর্ডার করতেও বেগ পেতে হয় গ্রাহকদের। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষেরা। তাঁদের বেশির ভাগেরই দুপুরে রুটি, কলা খেয়ে থাকতে হয়েছে।