যন্ত্রবাদনের মধ্য দিয়ে সূচনা হয়েছে ছায়ানটের বর্ষবরণ ১৪২৯ এর অনুষ্ঠান
যন্ত্রবাদনের মধ্য দিয়ে সূচনা হয়েছে ছায়ানটের বর্ষবরণ ১৪২৯ এর অনুষ্ঠান

২ বছর পর রমনায় ছায়ানটের বর্ষবরণের অনুষ্ঠান

সূর্য উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রবাদনের মধ্য দিয়ে রমনার বটমূলে সূচনা হয়েছে ছায়ানটের বর্ষবরণ ১৪২৯ এর অনুষ্ঠান। এর পরপরই পরিবেশন করা হয়েছে সম্মেলক কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত ‘মন, জাগ’ মঙ্গললোকে’।

এর মধ্য দিয়ে করোনার কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর আজ সাড়ম্বরে উদ্‌যাপন শুরু হলো পয়লা বৈশাখের। অনুষ্ঠানস্থলের চারপাশ ঘিরে রয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

রাজধানীর রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ ১৪২৯ এর অনুষ্ঠান

ছায়ানটের বর্ষবরণের এ অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে ৩৭টি আয়োজন দিয়ে। এর মধ্যে পঞ্চকবির গান, ব্রতচারীদের ‘বাংলা ভূমির প্রেমে আমার প্রাণ হইল পাগল’, লোকগান ‘নাও ছাইড়া দে মাঝি, পাল উড়াইয়া দে’ প্রভৃতি গান রয়েছে। সঙ্গে থাকছে আবৃত্তি-পাঠের মতো বিষয়গুলোও।

এবারের পরিবেশনে অংশ নেওয়া শিল্পী সংখ্যা ৮৫ জন । শিল্পীদের এ সংখ্যা আগে ছিল প্রায় দেড় শ। এ তথ্য প্রথম আলোকে জানিয়েছেন ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক শিল্পী লাইসা আহমদ।

রমনার বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠান।

রাজধানীতে ১৯৬৭ সালে প্রথম রমনার বটমূলে পয়লা বৈশাখের সূর্যোদয়ের সময় সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছায়ানট। সেই অনুষ্ঠানই মূলত নববর্ষ বরণের সাংস্কৃতিক উৎসবকে সারা দেশে বিস্তারিত হতে প্রেরণা সঞ্চার করেছে।

সেই থেকে (১৯৬৭) পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপনের একটা অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গও হয়ে উঠেছে ছায়ানটের বর্ষবরণের রেওয়াজ। এরপর কেবল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বৈরী পরিবেশের কারণে অনুষ্ঠান হতে পারেনি। ২০০১ সালে এ গানের অনুষ্ঠানে জঙ্গিরা ভয়াবহ বোমা হামলা করলেও অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়েনি।

ছায়ানটের পাশাপাশি বর্ষবরণে থাকছে চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে রকমারি কারুপণ্যের সম্ভার নিয়ে বৈশাখী মেলা প্রভৃতি। সাধারণত নববর্ষে পান্তা-ইলিশসহ নানা রকম দেশি খাবারের আয়োজন থাকে। তবে এবার পবিত্র রমজানে দিনের বেলায় এসব খাবারের আয়োজন থাকছে না। আর সব কর্মসূচিও রমজানের মর্যাদা রক্ষা করে পালন করা হবে বলে আগেই জানিয়েছেন আয়োজকেরা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিরাপত্তার কারণে এবার বেলা দুইটার মধ্যে পয়লা বৈশাখের সব অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। বেলা একটার পর উৎসব এলাকায় কাউকে আর ঢুকতে দেওয়া হবে না। আর সকাল সাড়ে ৯টায় টিএসসি থেকে শুরুর পর শোভাযাত্রা কেউ ঢুকতে পারবে না।