মা, বাবা ও এক শিশুসন্তান৷ তিনজনের হাতে তিনটি প্ল্যাকার্ড৷ সবগুলো প্ল্যাকার্ডেই রয়েছে যৌতুকবিরোধী স্লোগান।
আজ শুক্রবার সকালে তিন সদস্যের এই পরিবারটিকে দেখা গেল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে৷ দেশ থেকে ভয়াল সামাজিক ব্যাধি যৌতুকের সংস্কৃতি দূর করার চিন্তা থেকেই পরিবারটির এই প্রতিবাদ কর্মসূচি৷
সপরিবারে যৌতুকবিরোধী এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া তিনজন হলেন মোখলেছুর রহমান, তাঁর স্ত্রী তাহমিনা আক্তার ও তাঁদের সোয়া তিন বছরের শিশু হৃদিতা মেহেরুন৷
মোখলেছুরের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, 'যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি।'
তাহমিনার হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, 'যৌতুক চাওয়া মানেই ভিক্ষা চাওয়া।'
আর শিশু হৃদিতার হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, 'যৌতুককে না বলুন।'
মোখলেছুর রাজধানীর তেজগাঁও কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেছেন৷ এখন ঢাকায় স্বল্প বেতনের একটি বেসরকারি চাকরি করছেন। তিনি কয়েক বছর আগে বিয়ে করেন নিজের এলাকার মেয়ে তাহমিনাকে৷ তাহমিনা নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। তাঁদের এক মেয়ে।
মোখলেছুর প্রথম আলোকে বলেন, যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি৷ এর ভয়াল থাবা থেকে সমাজের নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত কেউই রেহাই পাচ্ছে না৷ যৌতুক এখন সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে৷ দরিদ্র-হতদরিদ্র পরিবারের জন্য যৌতুক একটি অভিশাপ৷ যৌতুকের কারণে অনেক বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে৷ যৌতুকের অর্থ বা জিনিসপত্র জোগাড় করতে অনেক মা-বাবা হিমশিম খাচ্ছেন। অনেক পরিবার একেবারে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে৷ তাই যৌতুকপ্রথা বন্ধ হওয়া দরকার।
মোখলেছুর বলেন, 'আমি ও তাহমিনা যৌতুকহীন বিয়ে করেছি৷ সমাজ ও দেশ থেকে আমরা যৌতুকের সংস্কৃতি দূর করতে চাই৷'
মোখলেছুর জানালেন, ২০১৩ সাল থেকে তিনি বিবেকের তাড়নায় দেশের মানুষের বিভিন্ন সমস্যা, সমাজের বিভিন্ন অসংগতি নিয়ে এককভাবে প্রতিবাদ ও সমাজ সচেতনতামূলক কাজ করে আসছেন৷
দেশ ও সমাজের কল্যাণে যৌতুকবিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সবার প্রতি আহ্বান মোখলেছুর-তাহমিনা দম্পতির।