পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন

মামলা করলেও অনেকে ভয়ে আপস করে ফেলেন

২০১৭ সালের ৮ জুলাই নরসিংদীর মধ্যকান্দাপাড়ায় খুন হন এক নারী। পরিবারের ভাষ্যমতে, খুনের ঘটনাটি ঘটে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বেলা দেড়টার মধ্যে। ওই নারীর একমাত্র ছেলে তখন স্কুলে এসএসসির প্রাক্‌–নির্বাচনী পরীক্ষা দিচ্ছিল। সে বাড়ি ফিরে দেখে রক্তে ভেসে যাচ্ছে সব। মা আর নেই।

এক দিন–দুই দিন করে তিন সপ্তাহ পার হয়ে যায়। হত্যা রহস্যের কিনারা করতে পারে না পুলিশ। নিহত নারীর স্বামী, মেয়ে ও জামাতাকে থানায় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এরপর ডাক পড়ে তাঁর একমাত্র ছেলেটির (ছেলেটি অপ্রাপ্তবয়স্ক বলে তার ও তার মা–বাবার নাম প্রকাশ করা হলো না)।

ছেলেটিকে চার দিন থানায় আটকে রাখার পর পুলিশ জানায়, দশম শ্রেণির ওই ছেলেটিই গলা কেটে খুন করেছে মাকে। নরসিংদীর শিশু আদালতে এখন এই হত্যা মামলার বিচার চলছে। আর ছেলেটি জামিনে রয়েছে।

ওই ছেলের ভগ্নিপতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাকে একদিন ভোরে ডিবি অফিসে ডাকল। বলল, আমার শ্যালক সব স্বীকার করেছে, সব বলবে। কিন্তু আমি যেন ওর মুখের দিকে না তাকাই। আড়চোখে দেখলাম ওর হাত–পায়ে জখম। ছেলেটাকে তারা বেদম মেরেছে।’

ছেলেটিকে থানায় আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে তার বাবা আদালতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে মামলা করেন। স্বীকারোক্তি আদায়ে ছেলের ওপর নির্যাতন হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর আইনজীবী আতাউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ওর শরীরে যে আঘাতের চিহ্ন, তা সাত-আট দিনের পুরোনো বলে মন্তব্য করেছেন চিকিৎসকেরা। যে সময়ের কথা বলা হয়েছে, সে সময় সে পুলিশি হেফাজতে ছিল।

৭ বছরে ১৮ মামলা, ১৪টিতেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন

ছেলেটিকে থানায় আটক রেখে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতনের অভিযোগ ছিল থানার উপপরিদর্শক মোশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে। গতকাল এ বিষয়ে বক্তব্য চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘তারা মিথ্যা কথা বলছে।’

ছেলেটির বিরুদ্ধে মামলার বিচার চললেও তাকে নির্যাতনের মামলায় পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। তদন্তে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি উল্লেখ করে পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এই প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ করলে মামলাটির মৃত্যু হবে। তবে ছেলেটির বাবা পুলিশের এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেবেন বলে জানিয়েছেন। পুলিশ সদর দপ্তরের রেকর্ডে নরসিংদীর এই মামলার পাশে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ‘তথ্যগত ভুল’।

দুটি মামলার বিচার চলছে

নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন কার্যকর হয়েছে ২০১৩ সালে। পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাবে, ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই আইনে মামলা হয়েছে ১৮টি। এর ১৪টিতেই পুলিশ ‘তথ্যগত ভুল’ বলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। তথ্যগত ভুল বলতে বাদীর দেওয়া তথ্যে গরমিল বোঝানো হয়েছে।

বাকি চারটি মামলার মধ্যে বুধবার একটির রায় হয়েছে। দুটি মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে। অপর মামলায় বাদীকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলাগুলোর মধ্যে একটির বাদী ছাতক পৌরসভার মেয়র কামাল আহমেদ চৌধুরীর ভাই শামীম আহমেদ চৌধুরী। সিলেট নগরে ট্রাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে ২০১৪ সালে কোতোয়ালি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পৌর মেয়রকে বেদম পেটান বলে অভিযোগ করা হয়। এই মামলার বিচার চলছে।
২০১৬ সালে মেহেরপুরে কারাগারে থাকা মাদক মামলার আসামি জামিলুর নিহত হওয়ার ঘটনায় জেলারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গত বছর অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি।

ঢাকার একটি মামলার বাদীকে আদালত ডেকে পাঠিয়েছেন। বাদী মমতাজ সুলতানার (লুসি) অভিযোগ, ২০১৫ সালের ১৩ জুলাই তাঁর স্বামী মাহবুবুর রহমানকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেন এসআই জাহিদ ও তাঁর সহযোগীরা। কিন্তু অল্প কিছুদিন পর মমতাজ আদালতকে জানান, তিনি কিছু মনে করতে পারছেন না। এসআই জাহিদকে তিনি কখনো দেখেননি। মমতাজের স্বামী ছিলেন মিরপুরের ঝুট ব্যবসায়ী।

১৯৯৮ সালে ডিবি হেফাজতে শামীম রেজা রুবেল নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র খুন হওয়ার প্রেক্ষাপটে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন প্রণয়নের দাবি ওঠে। মানবাধিকারকর্মী নূর খান মনে করেন, যে প্রত্যাশা থেকে এই আইন হলো সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, স্বজন হারানোর পরও মানুষ মুখে বালিশচাপা দিয়ে বসে থাকে। কারণ, আইন শুধু থাকলেই হবে না, আইনের প্রয়োগ হতে হবে। জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা না থাকায় নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে এবং বিচার হচ্ছে না।

কেন আইন, কী ঘটছে

নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বলা হয়েছে, নির্যাতন ও অন্যান্য নিষ্ঠুর অমানবিক অথবা অমর্যাদাকর আচরণ অথবা শাস্তির বিরুদ্ধে জাতিসংঘ সনদের কার্যকারিতা দিতে এই আইন। ১৯৮৪ সালের ১০ ডিসেম্বর নিউইয়র্কে নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক ও লাঞ্ছনাকর অথবা দণ্ডবিরোধী যে সনদ স্বাক্ষরিত হয়, বাংলাদেশ তার অংশীদার।

এ আইনে হেফাজতে নির্যাতন বলতে যেকোনো ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনকে বোঝানো হয়েছে। আর হেফাজতে মৃত্যু বলতে বোঝানো হয়েছে, সরকারি কোনো কর্মকর্তার হেফাজতে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু। অবৈধ আটকাদেশ বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গ্রেপ্তারের সময়ে ঘটা মৃত্যুও এ আইনের আওতায় পড়বে। এমনকি কোনো মামলায় সাক্ষী হোক বা না হোক, জিজ্ঞাসাবাদের সময় মৃত্যুও হেফাজতে মৃত্যু বলে গণ্য হবে।

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি যারা পর্যবেক্ষণ করছেন, তাঁরা বলছেন, আইনে ভালো ভালো কথা লেখা হলেও পরিস্থিতি এখনো ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের পক্ষে নেই। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) গত বছরের ২৯ জুলাই ‌‌‘ইউএন রেকমেন্ডেশন অন টর্চার’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে তারা ঠিক কীভাবে হেফাজতে নির্যাতন করা হয়, তার বেশ কিছু উদাহরণ দেয়, যেমন লোহার রড, বেল্ট ও লাঠি দিয়ে পেটানো, বৈদ্যুতিক শক দেওয়া, ছাদ থেকে ঝুলিয়ে রাখা, ওয়াটার বোর্ডিং (ডুবে যাওয়ার মতো অভিজ্ঞতা হয় এই শাস্তিতে) এবং ইচ্ছে হলেই ‌আত্মরক্ষার কথা বলে পায়ের নিচে গুলি করে দেওয়া ও ‌ক্রসফায়ার।

সম্প্রতি টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়। ওই ভিডিওতে র‌্যাব হেফাজতে তাঁদের বৈদ্যুতিক শক দেওয়া ও প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তবে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র ও সহকারী মহাপরিদর্শক মো. সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশি হেফাজতে যে কারণেই মৃত্যু ঘটুক না কেন, সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের কোনো গাফিলতি, বিচ্যুতি বা অপরাধ তদ‌ন্তে প্রমাণিত হলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

চূড়ান্ত প্রতিবেদন যেভাবে

কোনো কোনো মামলার ক্ষেত্রে বাদীপক্ষ আপস করছে বা করতে বাধ্য হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার কোনো কোনো মামলার কী অবস্থা, সে সম্পর্কে বাদী জানেন না। এমন কয়েকটি ঘটনা খতিয়ে দেখেছে প্রথম আলো।
নোয়াখালীতে এ আইনে তিনটি মামলা দায়েরের খবর পাওয়া যায়। সাবেক ছাত্রদল নেতা নজরুল ইসলামের বাবা আবুল কাশেম সোনাইমুড়ী থানার তৎকালীন ওসি আশরাফুল আলমসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বন্দর থানা–পুলিশের সহায়তায় সোনাইমুড়ী থানার পুলিশ নজরুলকে গ্রেপ্তার করে। তারা যুবলীগ নেতা আরিফ হোসেনকে হত্যার দায় স্বীকারে জবরদস্তি করে। অস্বীকৃতি জানালে তাঁর পায়ে গুলি করে নোয়াখালীর আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের সামনে ফেলে যায়। পরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) আনা হলে তাঁর পা কেটে ফেলতে হয়।
এই মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী সেলিম শাহী প্রথম আলোকে বলেন, মামলার বাদীর বিরুদ্ধে পরে একাধিক মামলা হওয়ায় তিনি খুব সম্ভবত দেশ ছেড়ে গেছেন। সাবেক ছাত্রদল নেতা নজরুলও আর খোঁজখবর করেন না খুব একটা। তিনি এলাকায় থাকেনও না।

অপর দুটি মামলার একটির বাদী কবি মোস্তফা ইকবাল। তাঁর অভিযোগ ছিল, ২০১৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে তাঁর ছেলে নোয়াখালী জিলা স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র রহমান ইকবাল ওরফে ইকুকে (১৬) থানায় ধরে নিয়ে নির্যাতন করেন কনস্টেবল জয় চাকমা ও আনসার লিয়াকত আলী। ছেলেকে থানায় ধরে নিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় তিনি মামলা করার পর পুলিশ ও আনসার সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়। পরে তাঁরা দুজনই তাঁর কাছে এসেছিলেন। অনেক অনুনয়-বিনয় করায় তিনি তাঁদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। পুলিশ পরে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। তিনি আর এ বিষয়ে আদালতে নারাজি দেননি।

একই বছরের ৭ অক্টোবর পুলিশের হেফাজতে নির্যাতনের বিরুদ্ধে চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ছায়েদুল হকের দায়ের করা মামলার দুই আসামি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুদ্দিন ও এসআই সুমন বড়ুয়াসহ অজ্ঞাতনামা তিন–চারজন আসামিও অব্যাহতি পেয়েছেন।


চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানায় ২০১৭ সালের ২৬ জুলাই রিমান্ডে থাকা আসামি মাহফুজ রহমানের মৃত্যুর পর আদালতে মামলা হয়। ওই মামলার আইনজীবী আকরামুল ইসলাম জানান, তাঁর মক্কেল বছরখানেক মামলা চালানোর পর আপস করে ফেলেন। পুলিশ পরে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে দেয়।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ উপপরিচালক নীনা গোস্বামী প্রথম আলোকে বলেন, এই আইনে মামলা করতে পারাটাই অনেকের জন্য দুরূহ ব্যাপার। সাহায্য, সহযোগিতা নিয়ে ভু্ক্তভোগী পরিবার মামলা করতে পারলেও পরে তাঁদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভয়ে ভুক্তভোগী পরিবার আপস করে ফেলে।

উদাহরণ হিসেবে নীনা গোস্বামী চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর মডেল থানায় রিমান্ডে থাকা আসামি আফসার আলীর প্রসঙ্গ তোলেন। মাস দুয়েক আগে আফসার আলীর মৃত্যুর পর পুলিশ কর্মকর্তারা আলাদা আলাদা বক্তব্য দেন। তিনি বাথরুমে ঢুকে গলায় তার পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন, এমন কথা বলেছেন এক কর্মকর্তা। অপরজন বলেছেন, তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। আর হাসপাতালের রেকর্ডে আছে, আফসারকে হাসপাতালে আনা হলে তিনি বুকে ব্যথার কথা বলেন। তা থেকেই তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তাঁরা মামলার সব প্রস্তুতি নিলেও আফসারের পরিবার সাহস করতে পারেনি।
গত বছরের ডিসেম্বরে উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি তপন চন্দ্র সাহাসহ চারজনের বিরুদ্ধে আলো বেগমের করা মামলায় পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। আলোর অভিযোগ ছিল, তাঁর স্বামী আলমগীর হোসেন বায়িং হাউসের গাড়িচালকের কাজের পাশাপাশি ভ্যানে গার্মেন্টসের জিনিসপত্র বিক্রি করতেন। ১৬ ডিসেম্বর পুলিশ সদস্য অতর্কিতে আলমগীরের প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে বলেন, ‘তোর পকেটে ইয়াবা আছে।’ থানায় বেধড়ক মারপিটের পর তাঁকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানোর এক দিন পরই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফিরে আসতে হয় আলমগীরকে। হাসপাতালে পৌঁছানোর পরপরই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

আলমগীরের স্বজন মো. সোহেল প্রথম আলোকে বলেন, সন্তানদের নিয়ে আলো বেগম গাইবান্ধার গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। সেখানেও পুলিশ মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে। মামলায় পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদনও দিয়ে দিয়েছে। তবে আলো বেগম নারাজি আবেদন করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

২০১৭ সালের ১৮ জুলাই পিরোজপুরের সুবিদপুর গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী মো. শাহজালাল খুলনায় শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ছিনতাইয়ের অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তাঁর দুই চোখ তুলে নিয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করেন শাহজালালের বাবা মো. জাকির হোসেন। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে তিনি পুলিশের একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ওই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। তবে তাঁরা এই মামলা চালিয়ে যাবেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক ও সরকারদলীয় সাংসদ নূর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের কাজই হলো সুষ্ঠুভাবে মামলা তদন্ত করা। এ ক্ষেত্রে মামলার আসামি কে, সেটা দেখার কোনো বিষয় নয়। এটা ঠিক, মামলার তদন্ত ঠিকমতো না হলে বিচারও সঠিক পাওয়া যাবে না। তবে কেউ ইচ্ছাকৃত তদন্ত ভিন্ন খাতে নিলে সে ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণেরও সুযোগ আছে।
(প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, নোয়াখালী)