ভোররাতে শিক্ষক-শ্রমিকদের উঠিয়ে দিল পুলিশ, লাঠিপেটার অভিযোগ

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাজরীন গার্মেন্টসের শ্রমিকসহ বিভিন্ন সংগঠনের অবস্থানরত সদস্যদের হটিয়ে দিয়ে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষক ও শ্রমিকদের উঠিয়ে দিয়েছে পুলিশ। আজ সোমবার ভোররাত সাড়ে তিনটা থেকে চারটার দিকে তাঁদের উঠিয়ে দেওয়া হয়।

এ সময় ঘুমন্ত শিক্ষক ও শ্রমিকদের লাঠিপেটা করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল উদ্দীন মুন্সী বলেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে আন্দোলনরত ব্যক্তিদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার নেই। এর চেয়ে বেশি তথ্য তাঁর হাতে নেই।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া ও জনসংযোগ) ওয়ালিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মারধরের কোনো ঘটনা সম্পর্কে তিনি অবহিত নন।

প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশের সদস্যরা

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ২২ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি। তারা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে জাতীয়করণের দাবিতে এই আন্দোলন করে আসছিল।

আন্দোলনকারী শিক্ষকদের একজন কাজী মোখলেছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রাতে প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনস্থলে তাঁরা ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ সেখানে পুলিশ এসে তাঁদের গায়ে পানি মারে। এরপর লাঠিপেটা করতে থাকে। কেন তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সে সম্পর্কে কোনো প্রশ্নের জবাব দেয়নি পুলিশ।

প্রায় একই ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলন করে আসা তাজরীন ফ্যাশনস লিমিটেডের আহত শ্রমিকদের কাছ থেকে।

কামাল মৃধা নামের এক শ্রমিক বলেন, পুলিশ অতর্কিতে ঘুমন্ত শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়। ঘুমন্ত শ্রমিকদের কাউকে কাউকে লাথিও মারে তারা।

প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীদের উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পড়ে আছে ছেঁড়া প্ল্যাকার্ড-ব্যানার

কামাল উদ্দিন আজ সকালে চিকিৎসার জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে যান। তাঁর সঙ্গে আহত অন্য শ্রমিকেরাও ছিলেন।

২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর ঢাকার আশুলিয়ায় তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক শ্রমিক দগ্ধ হয়ে মারা যান। আহত হন অনেকে।

শ্রম আইনের ক্ষতিপূরণের ধারা সংশোধন করে আহত শ্রমিকদের সম্মানজনক ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ কয়েকটি দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন তাজরীনে অগ্নিকাণ্ডে আহত বেশ কিছু শ্রমিক ও তাঁদের পরিবার।

সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) অনুমতি ছাড়া রাজধানীতে মিছিল-সভা-সমাবেশ করা যাবে না বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেয়।

প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থানরত শিক্ষক ও শ্রমিকদের কয়েকজন বলেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিলেন। কারও সঙ্গে কোনো গোলযোগে জড়াননি। তারপরও রাতে তাঁদের ওপর হামলা হয়েছে।