৬৯ বছর পরে এসেও ভাষা আন্দোলনের শহীদ ও ভাষাসৈনিকদের পূর্ণাঙ্গ কোনো তালিকা নেই। অথচ বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সোপান রচিত হয়েছে। ভাষাশহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা না হওয়া এই রাষ্ট্রের ব্যর্থতা।
আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। ভাষাসৈনিকদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির দাবিতে এই মানববন্ধন করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)।
মানববন্ধনে ন্যাপ মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, বায়ান্নর ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকারি বাহিনীর নির্বিচার গুলিতে বহু লোক প্রাণ হারালেও সবাই স্বীকৃতি পাননি। ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ এ তথ্য সংরক্ষণ করা না হলে ভাষাশহীদ কত, তা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে অজানা রয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, দেশের আদালতের নির্দেশ থাকার পরও ভাষাশহীদ ও ভাষাসৈনিকদের তালিকা প্রণয়ন না হওয়া এবং তাঁদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে সময়ক্ষেপণ করা দুঃখজনক ও হতাশার। এই ব্যর্থতার কারণে শাসকদের ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে একদিন।
মানববন্ধনে সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিনকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া হয়নি। অতি সত্বর ভাষাসৈনিকদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করুন। তা না হলে আন্দোলন–সংগ্রাম চালিয়ে যাব। এ তালিকা করতে আমরা দায়বদ্ধ।’
গণতান্ত্রিক ঐক্যের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, মহান ভাষা আন্দোলনের এত বছর পরও শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা না হওয়া এই রাষ্ট্রের ব্যর্থতা, শাসকদের ব্যর্থতা। কেউই এই ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারে না।
জাসদ উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এনামুজ্জামান চৌধুরী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের মতো ভাষাসৈনিকদের ভাষাবীর হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও মর্যাদা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সারা বছর শহীদ মিনারগুলো অবহেলায় থাকে। এগুলো সারা বছর সংরক্ষণের জন্য সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির পাশাপাশি ভাষাসৈনিকদের ভাতা দেওয়ার দাবি জানিয়ে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক জোটের সভাপ্রধান সৈয়দ মইনুজ্জামান বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের মতো ভাষাসৈনিকদের ভাষাবীর হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও মর্যাদা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
বাংলাদেশ ন্যাপের ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন প্রমুখ।