ভারতে নারী পাচার চক্রের ৭ সদস্য গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ভারতে নারী পাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য নুরজাহান ওরফে নদীসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সন্ধ্যায় যশোরের বেনাপোল ও শার্শা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের ঢাকায় আনা হচ্ছে।

পুলিশ জানায়, ভারতে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা চার তরুণী সম্প্রতি হাতিরঝিল থানায় মামলা করেছেন। ওই সব মামলার তদন্তে গ্রেপ্তারদের নাম বেরিয়ে আসে। তিনটি মামলার এজাহারে নুরজাহান ওরফে নদী ওরফে জয়া আকতার জান্নাত ওরফে ইতির নাম এসেছে। সর্বশেষ গত শনিবার মানব পাচার ও বিদেশে যৌনকর্মে বাধ্য করার অভিযোগে দায়ের করা দুই তরুণীর মামলায় রিফাদুল ইসলাম ওরফে টিকটক হৃদয়, নুরজাহানসহ ৩৬ জনের নাম এসেছে। ভুক্তভোগী দুই তরুণীর একজন থাকেন মগবাজারে এবং অন্যজন থাকেন যাত্রাবাড়ীতে।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হাফিজ আল ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ভারতে নারী পাচার চক্রের অন্যতম হোতা নুরজাহান ওরফে নদী এবং তাঁর ছয় সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের ঢাকায় এনে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

পুলিশ জানায়, যাত্রাবাড়ীর এক তরুণী গত বছরের ২০ নভেম্বর নুরজাহানের মাধ্যমে ভারতের বেঙ্গালুরুতে পাচার হন। সেখানের একটি পারলার থেকে পালিয়ে তিনি গত ৬ মে দেশে আসেন। তিনি বেঙ্গালুরুতে সাড়ে পাঁচ মাসের জিম্মিদশার বর্ণনা দেন পুলিশের কাছে। ওই নারীর ভাষ্য, কলকাতা থেকে তাঁকে ট্রেনে বেঙ্গালুরুতে নেওয়া হয়।

সেখানে থেকে দালাল তাসলিমা ওরফে বিউটির বেঙ্গালুরুর আনন্দপুরের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর আপন বড় বোনকে দেখতে পান। এক দিন পর তাঁদের দুজনকে যৌনকর্মের জন্য পৃথক দুই বাসায় পাঠানো হয়। সেখানে দুই বোনই যৌন নির্যাতনের শিকার হন। হাতিরঝিল থানায় করা মামলায় তরুণী উল্লেখ করেন, তাঁকে বেঙ্গালুরু, চেন্নাই ও কেরালার ম্যাসাজ সেন্টারে ও আবাসিক হোটেলে পাঠানো হয়।

গত ২ মে একটি ম্যাসাজ সেন্টারের জানালার কাচ ভেঙে পালিয়ে সেখান থেকে ট্রেনে কলকাতায় আসেন। সাতক্ষীরার সীমান্ত পেরিয়ে তিনি ৬ মে দেশে ফিরে আসেন।
মে মাসের শেষ দিকে ভারতে এক বাংলাদেশি তরুণীকে যৌন নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে ওই তরুণীকে ঢাকার মগবাজারের রিফাদুল ইসলাম ওরফে টিকটক হৃদয় নির্যাতন করছেন, এমন দেখা যায়। তারপরই ভারতে নারী পাচার চক্র নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। গত ২৭ মে টিকটক হৃদয়সহ ছয়জনকে ভারতের বেঙ্গালুরুর পুলিশ গ্রেপ্তার করে।