সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠনগুলোর ১১ নেতার ব্যাংক হিসাব চাওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, এ ঘটনার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সাংবাদিকদের আন্দোলন চলবে। তারই ধারাবাহিকতায় আগামী বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন সাংবাদিকেরা।
আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল। সমাবেশ থেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা ১১ নেতার ব্যাংক হিসাব চাওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান। তাঁরা বলেছেন, রাষ্ট্র যেকোনো নাগরিকের ব্যাংক হিসাব চাইতেই পারে। কিন্তু এখানে সংগঠনকে লক্ষ্য করে যেভাবে তথ্য চাওয়া হয়েছে, সেটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এ জন্য তাঁরা এটি প্রত্যাহার চান। একই সঙ্গে কী তথ্য পাওয়া গেল, সেটি প্রকাশের দাবি জানান।
জাতীয় প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আজকের এই সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘ব্যাংক হিসাব চাওয়ার বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানেন না, তথ্যমন্ত্রী জানেন না। তাহলে আমরা কোথায় যাব। এখানে একটি গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এতে সরকারের সঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে।’
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করার জন্যই এটা করা হয়েছে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বিএফইউজের একাংশের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আব্দুল মজিদ, বিএফইউজের আরেকাংশের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ ও মহাসচিব নুরুল আমিন , ডিইউজের একাংশের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, ডিইউজের সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য, সম্পাদক ফোরামের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক মাইনুল আলম ও কোষাধ্যক্ষ শাহেদ চৌধুরী, ডিআরইউর সভাপতি মোরসালীন নোমানী, সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান, ডিআরইউর সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুক্কর আলী, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, অপরাধবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি আবুল খায়ের, বর্তমান সভাপতি মিজান মালিক, অর্থনৈতিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি শারমিন রিনভী প্রমুখ।
এ ঘটনায় আগের দিন শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিক নেতারা বলেছিলেন, সাংবাদিকদের মনে ভয়ভীতি দেখানোর কৌশল হিসেবেই নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে বলে তাঁরা মনে করেন। ওই সংবাদ সম্মেলন থেকেই আজকের প্রতিবাদ সমাবেশ ঘোষণা করা হয়েছিল।
এর কিছুদিন আগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি, সম্পাদকসহ উল্লিখিত চারটি সংগঠনের ১১ সাংবাদিক নেতার ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়। গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, সরকারের একটি সংস্থার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকগুলোকে এ বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ। এই তালিকায় থাকা ১১ জন সাংবাদিক নেতা হলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি (আওয়ামী লীগ–সমর্থিত) ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক (বিএনপি–সমর্থিত) ইলিয়াস খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি (বিএনপি–সমর্থিত) কাদের গণি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক (আওয়ামী লীগ–সমর্থিত) সাজ্জাদ আলম খান , বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) (বিএনপি–সমর্থিত) সভাপতি এম আব্দুল্লাহ ও মহাসচিব নুরুল আমিন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) (আওয়ামী লীগ–সমর্থিত) সভাপতি মোল্লা জালাল ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আব্দুল মজিদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি মোরসালীন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান।