বিএসএমএমইউতে প্রথম ঘণ্টায় প্রায় ৫০ জনকে টিকা

বিএসএমএমইউ হাসপাতালে করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে
ছবি: আবদুল্লাহ আলিফ

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

আজ রোববার সকাল নয়টার দিক বিএসএমএমইউ হাসপাতালে করোনার টিকাদান শুরু হয়। এখানে প্রথম এক ঘণ্টায় প্রায় ৫০ জন টিকা নিয়েছেন।

বিএসএমএমইউ হাসপাতালে টিকা দেওয়ার জন্য ৮টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। মূলত ভিআইপি ও করোনার সম্মুখসারির যোদ্ধাদের এখান থেকে টিকা দেওয়া হচ্ছে।

টিকা দেওয়ার পর টিকাগ্রহণকারীকে টিকাদান-পরবর্তী কক্ষ বা পোস্ট ভ্যাকসিনেশন রুমে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত টিকাগ্রহণকারী ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

বিএসএমএমইউ হাসপাতালে স্থাপিত রেজিস্ট্রেশন পয়েন্ট

বিএসএমএমইউতে ‘পোস্ট ভ্যাকসিনেশন ম্যানেজমেন্ট’ নামে একটি সেন্টার খোলা হয়েছে। মূলত, টিকা নেওয়ার পর টিকাগ্রহণকারীর কোনো সমস্যা হলে তা ব্যবস্থাপনার জন্য এই সেন্টারটি খোলা হয়েছে।

বিএসএমএমইউর গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তরফদার রুনা লায়লা টিকা নেওয়ার আগে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মধ্যে কোনো ভয় কাজ করছে না। তিনি আগেও বিভিন্ন টিকা নিয়েছেন। তাই এ ক্ষেত্রেও তাঁর কোনো সমস্যা হবে না বলে তিনি আশা করছেন।

সরকারি কর্মকর্তা মোবারক হোসেন টিকা নেওয়ার আগে বলেন, গতকাল শনিবার রাতে তিনি টিকা নেওয়ার বিষয়ে খুদে বার্তা (এসএমএস) পান। এই খুদে বার্তা পাওয়ার পর থেকে তাঁর মধ্যে উত্তেজনা কাজ করছিল।

সারা দেশের সরকারি-বেসরকারি ১ হাজার ৫টি হাসপাতাল থেকে আজ করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে।

শুরুর দিন ৩ লাখ ৬০ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে নিবন্ধন হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম। গতকাল শনিবার পর্যন্ত টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৩ লাখ ৪৮ হাজার মানুষ।

বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ৮টি বুথ থেকে টিকা দেওয়া হচ্ছে

সরকারের কাছে ৭০ লাখ টিকা আছে। এর ২০ লাখ টিকা ভারত সরকার বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দিয়েছে। বাকি ৫০ লাখ টিকা সরকার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে কিনেছে। এই টিকা ৩৫ লাখ মানুষকে দেওয়া হবে।

দেশব্যাপী সুষ্ঠুভাবে করোনার টিকা বিতরণ ও প্রয়োগের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একটি জাতীয় পরিকল্পনা করেছে। টিকাদানকর্মীদের জন্য প্রশিক্ষণ নির্দেশিকা তৈরি করেছে। কেন্দ্রীয়ভাবে ও জেলায় জেলায় স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল রাজধানীর একাধিক হাসপাতালসহ সারা দেশের হাসপাতালগুলোয় প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, করোনা মহামারি মোকাবিলায় স্থায়ী সমাধান এনে দিতে পারে টিকা। প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে ব্যাপকভাবে টিকাদান শুরু হয়েছে। আজ বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে টিকাদান শুরু হচ্ছে।

টিকা নেওয়ায় অপেক্ষায় লোকজন

গত ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ওই দিন ২১ জনকে করোনার টিকা দেওয়া হয়। এর পরদিন রাজধানীর ৫টি হাসপাতালে ৫৪৬ জনকে টিকা দেওয়া হয়। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলা হয়, টিকা নেওয়া ৫৬৭ জনই সুস্থ আছেন। কারও বড় ধরনের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

আজ টিকাদান শুরু হয়ে তা কত দিন চলতে থাকবে, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না সরকারি কর্মকর্তারা। গত মাসে সরকারি কর্মকর্তারা বলেছিলেন, প্রতি মাসে দুই সপ্তাহ ধরে টিকা দেওয়া হবে, সরকারি ছুটির দিন ছাড়া। গতকাল মহাপরিচালক বলেছেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। আমরা টিকা দিতে থাকব।’

বিএসএমএমইউতে স্থাপন করা হয়েছে ‘পোস্ট ভ্যাকসিনেশন’ সেন্টার