বাসে উঠতে গেলে চালক বলেন, 'এই, মহিলা উডাইস না'

সংরক্ষিত নারী আসনে বসে আছেন পুরুষ যাত্রীরা। গতকাল সাতমসজিদ রোডে। সাবিনা ইয়াসমিন
সংরক্ষিত নারী আসনে বসে আছেন পুরুষ যাত্রীরা। গতকাল সাতমসজিদ রোডে।  সাবিনা ইয়াসমিন

সকাল ৮টায় মিরপুরের শেওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রীতি হাসান। যাবেন মতিঝিলে। চাকরি করেন একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে। সাতসকালেই তাঁর চোখেমুখে বিরক্তির ছাপ। বললেন, বাসে উঠতে গেলেই হেলপার (চালকের সহকারী) বলেন, ‘মহিলা সিট খালি নাই।’ এরপরও জোর করে উঠতে গেলে চালক চিৎকার করেন, ‘এই, মহিলা উডাইস না।’ 

গণপরিবহনে চলতে গিয়ে নারীদের পড়তে হয় নানা প্রতিবন্ধকতায়। বাস দরজা বন্ধ অবস্থায় না থামিয়ে চলে যায়। গতকাল বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেট মোড়ে। ছবি: আশরাফুল আলম

গতকাল সোমবার সকালে কথা হয় প্রীতি হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিদিন সকালে শেওড়াপাড়া থেকে মতিঝিল যাওয়া যেন যুদ্ধ। অফিস শেষে ফেরার পথেও নানা ঝামেলা। তিনি বলেন, একটু ভিড় থাকলে হেলপার নারী যাত্রীদের বাসে ওঠাতে চান না। আবার বাসের ভেতরে নারীদের জন্য নির্ধারিত আসনেও বেশির ভাগ সময় পুরুষ যাত্রীরা বসে থাকেন। 

কেন অফিস সময়ের আগে এবং অফিস ছুটির পর নারী যাত্রীদের বাসে তুলতে আপত্তি করা হয়, জানতে চাইলে শিখর পরিবহনের (মিরপুর–যাত্রাবাড়ী রুটের) একটি বাসের চালকের সহকারী মো. বেল্লাল বলেন, ‘ভিড়ের সময় যাত্রীরা দাঁড়াইয়া যায়। মহিলা উডাইলে বেশি জায়গা দেওন লাগে।’ 

যাত্রীদের ভিড়ে লেগুনায় উঠতে পারছেন না নারীরা। গতকাল মোহাম্মদপুরে। জাহিদুল করিম

শেওড়াপাড়া, মিরপুর ১০, বনানী, মহাখালী ও ফার্মগেটে বিভিন্ন পেশার ৩০ জন নারীর সঙ্গে গতকাল কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁদের বক্তব্য, অফিসের সময় বাসে উঠতে দিতে চান না হেলপাররা। তারপরও খরচের কথা ভেবে ধাক্কাধাক্কি করে উঠতে হয়। আবার বাসে ওঠার সময় হেলপার, কখনো কখনো পুরুষ যাত্রীরা গায়ে হাত দেন। গাদাগাদি করে দাঁড়াতে হয়। 

নারীরা বলছেন, নারীদের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় বাসের সংখ্যা বাড়াতে হবে।