বাসচালকের সহকারী মারধর করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রী রাফিয়া তামান্না। তিনি বলেন, হাফ পাস দেওয়া নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে বাসটির চালকের সহকারী তাঁকে মারধর করেন। তাঁকে বাসে আবার দেখা গেলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর রামপুরা ব্রিজ বাস স্টপেজে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রীর অভিযোগ, রামপুরা থানায় গেলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামলা নিতে গড়িমসি করেন। পরে অবশ্য পুলিশ তাঁর অভিযোগটিকে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে গ্রহণ করেছে।
রাফিয়া তামান্না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী।
জিডিতে রাফিয়া তামান্না বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে তরঙ্গ প্লাস পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন তিনি। প্রথম থেকেই চালকের সহকারী অসদাচরণ করছিলেন। বাসভাড়া চাওয়া হলে হাফ পাস সুবিধা নিতে নিজেকে শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দেন তিনি। শেষে রামপুরা ব্রিজ স্টপেজে শিক্ষার্থী পরিচয়পত্র দেখাতে বলা হয় তামান্নাকে। তিনি পরিচয়পত্র বের করলে তা না দেখেই নানা ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করতে থাকেন চালকের সহকারী। একপর্যায়ে তামান্না বাস থেকে নেমে যাওয়ার সময় ‘এই বাসে আর দেখলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেব’ বলে হুমকিও দেন। এরপর তামান্না চালকের সহকারীকে চড় দিলে হাতাহাতি শুরু হয়। ওই সহকারী তামান্নাকে কয়েকবার চড়থাপ্পড় দেন এবং নাকে ঘুষি মারেন। এতে তাঁর নাক থেকে রক্ত পড়া শুরু হয় এবং হাতের আঙুলও কেটে যায়।
রাফিয়া তামান্না গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার পর রামপুরা থানায় গিয়ে বিষয়টি জানালে পুলিশ ওই চালকের সহকারীকে আটক করে আনে। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম, লোকটিকে মাফ করে দেব। কিন্তু থানায় এসেও সে বিভিন্ন বাজে কথা বলতে থাকে। পরে আমি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিই।’
তামান্না অভিযোগ করে বলেন, ‘মামলা করতে চাইলে পুলিশ অনেকক্ষণ ধরে গড়িমসি করে। মামলাটি তারা নিতেই চাইল না। খবর পেয়ে আমার মা থানায় যাওয়ার পর তাঁর অনুমতি নিয়ে পুলিশ একটি জিডি গ্রহণ করে। মা থানায় যাওয়ার আগে ওসি আমাকে বোঝাচ্ছিলেন, মামলা করলে লোকটার (চালকের সহকারী) লঘু পাপে গুরু দণ্ড হয়ে যাবে।’
এ নিয়ে জানতে চাইলে রামপুরা থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম মামলা না নিতে চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ আমরা জিডি হিসেবে গ্রহণ করেছি। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে থানায় আনা হলে তিনি ওই ছাত্রীর হাত-পা ধরে মাফ চান। পরে ছাত্রীর মা বলেন, মামলা করার দরকার নেই। তাঁদের অনুরোধের ভিত্তিতেই জিডি গ্রহণ করা হয়েছে। মামলা করার ব্যাপারে তাঁরা আগ্রহী ছিলেন না।’