কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী জামাত-শিবিরের’ মুখপত্র বলে আখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। ‘বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে আল-জাজিরার সম্প্রচার নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এই দাবি জানায় বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। মঞ্চের অন্য দুই দাবি হলো ‘বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের’ অপরাধে আল-জাজিরার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া এবং জামায়াতে ইসলামীর ‘পেইড এজেন্ট’ ডেভিড বার্গম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আল-জাজিরা বহু আগে থেকেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করে চলেছে। জঙ্গিবাদকে উসকে দেওয়ার কাজও তারা সুচারুভাবেই চালিয়ে যাচ্ছে। এবার তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ধারা ব্যাহত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, আল-জাজিরা কর্তৃক বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র অতীতের মতো ভবিষ্যতেও রুখে দেবেন দেশের সচেতন নাগরিকেরা।’
মঞ্চের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ বলেন, আল-জাজিরা শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই পক্ষপাতমূলক সংবাদ পরিবেশনা করছে না, বরং এ ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুবিদিত। পশ্চিমা বিশ্বে আল-জাজিরাকে দেখা হয় সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের পরোক্ষ প্রেরণাদাতা হিসেবে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ পরিবেশনের কারণে মিসর ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সরকার এই সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। এই যখন পরিস্থিতি, তখন বাংলাদেশেও জনমত জোরদার হচ্ছে আল-জাজিরার বিরুদ্ধে।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে মঞ্চের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি নূর আলম, রোমান হোসাইন, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি মিলন ঢালী ও সাধারণ সম্পাদক দ্বীন ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা-বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর’ প্রামাণ্যচিত্র প্রচারের প্রতিবাদে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চও (বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাবেক সংগঠন) আজ দুপুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন করেছে। মঞ্চের এই অংশের আহ্বায়ক অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীন এতে বক্তব্য দেন। মানববন্ধন শেষে তাঁরা সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।
আল-জাজিরায় গত সোমবার বাংলাদেশ নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সম্প্রচারিত হয়, যা ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। সরকারিভাবে এই প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিবাদ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও এই প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।