বরকত-রুবেলের সম্পদের হিসাব ‘অতিরঞ্জিত’, দাবি স্বজনদের

সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান ওরফে রুবেল
ফাইল ছবি

ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের স্বজনেরা দাবি করেছেন, সম্পদের হিসাব বেশি দেখিয়ে দুই হাজার কোটি টাকার অর্থ পাচার মামলায় তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে। অর্থ পাচারের মামলাকে ‘অতিরঞ্জিত’ উল্লেখ করে স্বজনদের অভিযোগ, বরকত ও রুবেল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার।

আজ শনিবার রাজধানীর ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বরকত ও রুবেলের স্বজনেরা। সেখানে তাঁরা বরকত ও রুবেলের বৈধ সম্পদের বিস্তারিত ও ষড়যন্ত্রের উদাহরণ তুলে ধরেন। তাঁরা এ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন, বরকত ও রুবেল ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন।

সাজ্জাদ হোসেন বরকত ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও তাঁর ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ফরিদপুর প্রেসক্লাবের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সভাপতি। গত ২৬ জুন সিআইডি এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে অর্জন ও পাচারের অভিযোগে মামলা করে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল অবৈধ সম্পদদের মালিক হয়েছেন সাজ্জাদ ও ইমতিয়াজ। এ ছাড়া মাদকের কারবার ও ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ করেছেন তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন রুবেলের মেয়ে যাওয়াতা আফনান রাদিয়া। তিনি বলেন, রুবেলের নিজ নামে ও তাঁর পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের নামে ১৫৯ বিঘা জমি রয়েছে। তিনটি ব্যাংকে রুবেলের ৩০ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে। দুটি ড্রাম ট্রাক, দুটি হিনো বাস, তিনটি জিপ গাড়ি এবং প্রতিষ্ঠানের কাজে ব্যবহৃত পে লোডার, রোলার, পানির গাড়ি রয়েছে। ঢাকায় রুবেলের কোনো ফ্ল্যাট বা জমি নেই। ফরিদপুর মূল শহরেও কোনো বাড়ি বা ফ্ল্যাট নেই।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বরকতের নামে ২০০ বিঘা জমি রয়েছে। ব্যাংকঋণ রয়েছে ২০ কোটি টাকার মতো। চরাঞ্চলে ৪০০ বিঘা জমির ওপর একটি খামার আছে। বরকতের ১০টি বাস, ৫-৭টি ট্রাক আছে। বরকতের ঢাকায় কোনো ফ্ল্যাট বা জমি নেই। বরকত-রুবেলের নিজস্ব জমিতে কিছু আধা পাকা দোকান রয়েছে। এসব সম্পদ বৈধ আয় থেকে কেনা, যা আয়কর নথিতে দেখানো হয়েছে।

নথিপত্রে দেখানো হিসাবের বাইরে বরকত-রুবেলের কোনো সম্পত্তি নেই বলে লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়। তাতে বলা হয়, দুই হাজার কোটি টাকার মামলাটি অতিরঞ্জিত।

মামলার অভিযোগপত্রে বরকত-রুবেলের ব্যাংকে দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেনের কথা বলা হয়েছে। একই টাকা একবার জমা, তোলা ও পে-অর্ডার করা মিলিয়ে তিনবার লেনদেন হয়েছে। সরকারি টাকার বাইরে বরকত-রুবেলের ব্যাংকে তেমন কোনো লেনদেন হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে রুবেলের ছেলে আদিয়াত হাসান রাফিম ও বরকতের মেয়ে ইসরাত জাহান আদ্রিতি উপস্থিত ছিলেন।