সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতা মোহাম্মদ নাসিমকে শ্রদ্ধা জানাতে বনানী কবরস্থানে গিয়েছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ নাসিমকে ‘স্যালুট’ জানিয়ে সেখান থেকে তিনি আবার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালেই ফেরেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তিনি গত ২৯ মে থেকে এখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত কিটের পরীক্ষায় গতকাল শনিবার তাঁর করোনা নেগেটিভ আসে।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় বনানী কবরস্থানে যান জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দপ্তর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম এবং গণস্বাস্থ্য সামাজিক মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ মুহিব উল্লাহ খোন্দকার।
জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, 'গতকাল রাতেই তিনি বলেন যে আমি মুক্তিযোদ্ধা নাসিমকে শ্রদ্ধা জানাতে যেতে চাই। যদিও ওনার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় চিকিৎসকসহ অনেকেই নিষেধ করেছিলেন।’ জাহাঙ্গীর আরও জানান, সকাল সাড়ে ১০টায় নিজের গাড়িতে করে বনানী কবরস্থানে জাফরুল্লাহ চৌধুরী উপস্থিত হয়ে আওয়ামী লীগের নেতা নাসিমের কফিনের সামনে দাঁড়িয়ে হাত উঁচিয়ে স্যালুট দেন। এ ছাড়া জাতীয় নেতা তাজউদ্দীন আহমদ ও ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর কবর জিয়ারত করেন এবং অন্যদের জন্য দোয়া করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সাড়ে ১১টায় তাঁরা আবার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ফিরে আসেন।
আজ রোববার সকালে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চিকিৎসক গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের অধ্যাপক মামুন মোস্তাফী প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল শনিবার রাতে পরীক্ষার যে রেজাল্ট পাই, সেখানে তিনি করোনা নেগেটিভ। তবে ওনার পিসিআর টেস্ট করানো হবে।’ গতকাল বিকেলে মামুন মোস্তাফী জানিয়েছিলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ফুসফুসের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। তবে এখনো পুরোপুরি ভালো হয়নি। তাঁর গলার ইনফেকশনটাও আগের চেয়ে ভালো। কিন্তু পুরোপুরি সারেনি। বাকি বিষয়গুলো স্থিতিশীল। তাঁর থেরাপি, অ্যান্টিবায়োটিক, ডায়ালাইসিস নিয়মিত চলছে। নিজের খাওয়া, টয়লেটে যাওয়া—সব নিজেই করছেন। কৃত্রিম অক্সিজেন এখন লাগছে না। তবে এখনো তিনি ঝুঁকিমুক্ত নন।
গতকাল শনিবার মুহিব উল্লাহ খোন্দকারের বরাতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফেসবুক পেজে জানানো হয়, 'জাফরুল্লাহ চৌধুরী করোনা অ্যান্টিজেন নেগেটিভ এবং অ্যান্টিবডি ফর কোভিড–১৯ পজেটিভ। ওনার পরীক্ষা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত র্যাপিড টেস্টিং কিট দিয়ে করানো হয়েছে। উনি বর্তমানে কোভিড নেগেটিভ নিউমোনিয়াতে ভুগছেন। বাড়তি অক্সিজেন ছাড়াই তিনি অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯৫% রাখতে পেরেছেন।'
৪ জুন রাতে ৭৯ বছর বয়স্ক এই মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তবে ৬ জুন থেকে ধীরে ধীরে তাঁর উন্নতি হতে থাকে। তাঁর চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড কাজ করছে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত করোনা শনাক্তে র্যাপিড টেস্টিং কিট দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে গত ২৫ মে জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানান, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এ ছাড়া বিএসএমএমইউর পরীক্ষায়ও গত ২৮ মে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ আসে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্ত্রী শিরিন হক ও ছেলে বারিশ চৌধুরীও করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হন। শিরিন হকের একটি পরীক্ষায় নেগেটিভ এসেছে। ছেলে এখনো পজিটিভ।