সব ধরনের সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে বিশেষ ব্যবস্থায় সুযোগের দাবি ও শাহবাগে পুলিশি হেনস্তার প্রতিবাদে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ঘেরাও করবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা। সোমবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে মিরপুর-১৪ তে ফাউন্ডেশন কার্যালয় ঘেরাও করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
রোববার রাতে চাকরিপ্রত্যাশী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের আহ্বায়ক আলী হোসেন প্রথম আলোর কাছে তাঁদের কর্মসূচির কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিবন্ধীদের জন্য অভিভাবক হচ্ছে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন। তাই সকালেই আমরা অধিকার আদায়ে প্রতিষ্ঠানটি ঘেরাও করব।’
এর আগে সব ধরনের সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে বিশেষ ব্যবস্থায় সুযোগের দাবিতে রোববার সকাল দশটা থেকে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা। তাঁদের দাবি, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারি নবম থেকে ১০ম গ্রেডভুক্ত স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি চাকরিতে বিশেষ ব্যবস্থায় নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। অবস্থান শেষে দুপুর দুইটার দিকে শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে স্মারকলিপি দিতে গেলে বাধা দেয় পুলিশ। তাঁদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিতে গেলে পুলিশ তাঁদের মাইক, সাদাছড়ি কেড়ে নিয়ে হেনস্তা করেছে। যদিও এসব অভিযোগের কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ।
আলী হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকালে আমরা যখন জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেই, তখন থেকেই আমাদের সঙ্গে পুলিশ অসহযোগিতামূলক আচরণ করেছে। আমি যখন বক্তব্য দিচ্ছিলাম, তখন পুলিশ আমার হাত থেকে মাইক কেড়ে নেয়। এরপর আমরা স্মারকলিপি দিতে যেতে চাইলে আমাদের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। দুজনকে টেনে হিঁচড়ে মারধর করে শার্ট ছিঁড়ে ফেলে।’
বিক্ষোভরত আরেক নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘চোখে দেখতে পাই না বলে পুলিশ আমাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়েছে। ওরা আমাদের ছেলেদের মেরেছে, মেয়েদের গায়ে হাত দিয়েছে। আমাদের সাদাছড়ি নিয়ে গেছে।’
আন্দোলনে অংশ নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘পুলিশ আমাকে থাপ্পড় দিয়েছে। তিনি একজন পুলিশ হয়ে কী জানেন নারীদের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করতে হয়?’
পরে বিকেল পাঁচটার দিকে পুলিশের সহযোগিতায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের একটি দল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বরাবর স্মারকলিপি দিতে যায়। ওই স্মারকলিপিতে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের আগের শ্রুতিলেখক নীতিমালা অনুযায়ী ৪০তম বিসিএসে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের অংশ নেওয়ার সুযোগের দাবি, পিএসসি কর্তৃক রিসোর্স শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করাসহ সাত দফা দাবির কথা উল্লেখ করা হয়।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁদের কর্মসূচি পালনে কোনো অনুমতি ছিল না। তাঁদের কাউকে কোনো প্রকার হেনস্তা করা হয়নি। তাঁরা সবাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিতে যেতে চেয়েছিলেন, আমরা পুলিশের গাড়িতে করে তাঁদের ১০ জনকে স্মারকলিপি দিতে নিয়ে যাই।’