পরীক্ষামূলকভাবে এলাকাভিত্তিক ‘ভিন্নমাত্রার’ লকডাউন চলা পূর্ব রাজাবাজারে প্রথম পাঁচ দিনে নতুন করে আরও ২৪ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মী আজ প্রথম আলোকে বলেন, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৩২ জন নমুনা দিয়েছেন। এর মধ্যে ১৪ জুন পর্যন্ত পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। তাতে ২৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
৪৫ থেকে ৫০ হাজার মানুষের বসবাস এই এলাকায় লকডাউন শুরুর সময় আক্রান্ত ছিলেন ৩১ জন। নতুন করে এত বেশি আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা আজ প্রথম আলোকে বলেন, যেখানে লকডাউন বা ‘রেড জোন’ করা হচ্ছে, সেখানে বেশি নমুনা সংগ্রহ করার চেষ্টা হচ্ছে। সে কারণে প্রথম দিকে শনাক্ত বাড়বে। কারণ, পরীক্ষা বেশি হচ্ছে। পরবর্তী ফল কী হয়, সেটা দেখতে হবে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ১ জুন সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক সভায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিবেচনায় দেশের বিভিন্ন এলাকাকে লাল (উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ), হলুদ (মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ) ও সবুজ (নিম্ন ঝুঁকিপূর্ণ) এলাকায় ভাগ করে ভিন্নমাত্রায় এলাকাভিত্তিক লকডাউন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর ৯ জুন দিবাগত রাত ১২টার পর রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারে পরীক্ষামূলকভাবে লকডাউন শুরু হয়।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে পুলিশ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের নিয়ে কড়াকড়িভাবে এই লকডাউন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ওই এলাকার লোকদের পরীক্ষার জন্য স্থানীয় নাজনীন স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি নমুনা সংগ্রহ বুথ স্থাপন করা হয়। সেখানেই ওই এলাকার মানুষ নমুনা দিচ্ছে। ইতিমধ্যে ওই এলাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকা একজন বাসিন্দা মারা গেছে।
এই এলাকার লকডাউন ১৪ দিন থেকে ২১ দিন হওয়ার কথা রয়েছে। আগের মতো আজও ব্যাপক কড়াকড়ি ছিল। তবে সেখানকার একজন নাগরিক আগের দিন গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ভেতরে কিছু পণ্যের দাম বেশি রাখা হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের একজন কর্মী প্রথম আলোকে বলেন, এমন অভিযোগ তাঁদের কাছেও এসেছিল। পরে তা সমাধান করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম আজ পূর্ব রাজাবাজার এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় ঢাকার অন্যান্য এলাকায় লকডাউন শুরুর বিষয়ে মেয়র উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ম্যাপিং পাওয়ার ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগবে বাস্তবায়নের জন্য।