পায়ে লিখে জেএসসি দিচ্ছে নরসিংদীর সঞ্জু দাস

পা দিয়ে লিখে জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে সঞ্জু দাস। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের পুরিন্দা এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো।
পা দিয়ে লিখে জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে সঞ্জু দাস। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের পুরিন্দা এলাকায়।  ছবি: প্রথম আলো।

অন্য শিক্ষার্থীদের মতো নয় সঞ্জু দাসের জীবন। জন্ম থেকেই দুই হাত নেই। পায়ের ওপর ভরসা করেই জীবন চলে। তবে শারীরিক এই প্রতিবন্ধকতা দমাতে পারেনি সঞ্জুকে। নিজের পা দুটোকেই লড়াইয়ের হাতিয়ার করে নিয়েছে। ইচ্ছাশক্তিতে ভর করে পায়ে লিখেই এ বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (জেএসসি) দিচ্ছে ১৫ বছরের এই কিশোর।

নরসিংদী সদর উপজেলার কান্দাইল গ্রামে সঞ্জুর বাড়ি। বাবা চিত্তরঞ্জন ও মা শেফালী রানীর তিন সন্তানের মধ্যে সঞ্জু দ্বিতীয়। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার পুরিন্দা কে এম ছাদেকুর রহমান উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে এ বছর জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। পরীক্ষা চলাকালীন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সাদা স্কুল ইউনিফর্মে সঞ্জুর হাতের অংশ ঢাকা। বসার বেঞ্চের ওপর খাতা রেখে ডান পায়ে কলম ধরে অবিরাম লিখে যাচ্ছে। কোনো দিকেই ভ্রুক্ষেপ নেই।

পরীক্ষা শেষে কথা হয় সঞ্জুর সঙ্গে, পরীক্ষা কেমন হয়েছে প্রশ্ন করতেই মুখভর্তি হাসি নিয়ে উত্তর দেয়, ভালো হয়েছে। কথায় কথায় জানা হয় সঞ্জুর জীবনের গল্প। দুটি হাত ছাড়াই জন্ম তার। তবে তা নিয়ে কখনোই দুঃখবোধ হয়নি। পড়ালেখার শুরুতে পায়ে লিখতে কিছুটা সমস্যা হলেও একসময় তা মানিয়ে গেছে। দরিদ্র পরিবারের সন্তান সঞ্জু স্বপ্ন দেখে উচ্চশিক্ষা শেষে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার। সঞ্জুর ইচ্ছার কাছে দারিদ্র্য ও প্রতিবন্ধকতা দুটোই হার মেনেছে। হাত না থাকায়ও সে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে। কোনো কিছুতেই পিছিয়ে নেই। নিজ গ্রামের জবেদা ভূঁইয়া আদর্শ বিদ্যা নিকেতন থেকে জিপিএ–৪ দশমিক ৫ নিয়ে প্রাথমিক সমাপনী শেষ করেছে। বর্তমানে বনাইদ বাবু মিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।