পদ্মা সেতুর নাটবল্টু খুলতে সরঞ্জাম ব্যবহৃত হয়েছে: সিআইডি

রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তারা
ছবি: প্রথম আলো

পদ্মা সেতুর নাটবল্টু খোলার ঘটনায় সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আজ সোমবার সিআইডির এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন কর্মকর্তারা।

আজ মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, ‘পদ্মা সেতুর নাটবল্টু হাত দিয়ে খোলা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে আমরা সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা করে জেনেছি, এত বড় একটা স্থাপনার নাটবল্টু হাত দিয়ে খোলা যাবে না।’

রেজাউল মাসুদ বলেন, এতে বোঝা যায় নাটবল্টু হাতে দিয়ে খোলা হয়নি, নাটবল্টু খোলার জন্য সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে। কী ধরনের সরঞ্জামা দিয়ে নাটবল্টু খোলা হয়েছে, সে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি সিআইডির এ কর্মকর্তা।

এর আগে সেতুর নাটবল্টু খোলার একটি ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। পদ্মা সেতুর নাটবল্টু খোলার অভিযোগে গতকাল রোববার বায়েজিদ তালহা নামের ওই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার বায়েজিদের বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে বলেও জানান রেজাউল মাসুদ।

মো. বায়েজিদ তালহাকে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে আটক করেছে সিআইডি

সংবাদ সম্মেলনে রেজাউল মাসুদ বলেন, ওই যুবককে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাটবল্টু খোলার কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি কীভাবে এ কাজটি করেছেন, সে বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য দেননি। তাঁরা একটি গাড়ি নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন, এই গাড়িতে এই যুবক ছাড়া আরেকজন ছিলেন।

মামলার এজাহারে কী কী আলামত দেখানো হয়েছে, জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, তাঁর কাছ থেকে মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে, সেটা মামলার আলামত হিসেবে দেখানো হয়েছে; তবে নাটবল্টু এখনো উদ্ধার করা হয়নি, সে কারণে মামলায় এগুলো আলামত হিসেবে দেখানো হয়। এগুলো উদ্ধার সাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে আলামত হিসেবে দেখানো হবে।

সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ঘটনার কোনো সিসিটিভি ফুটেজ এখন আমরা পাইনি । ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।’

ঘটনার পর তড়িঘড়ি করে মামলা করে এবং নাটবল্টু আলামত হিসেবে না দেখিয়ে আসামিকে মামলায় কোনো সুবিধা দেওয়া হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা অনেক তথ্যই পেয়েছি কিন্তু সব তথ্য গণমাধ্যমের সামনে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। যে তথ্যগুলো আমরা শুধু নিশ্চিত হতে পেরেছি, সেগুলো আমরা গণমাধ্যমকে বলছি। মামলাটির তদন্ত দিন রয়েছে, তদন্তে আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে।’

গ্রেপ্তার যুবকের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে রেজাউল মাসুদ বলেন, ‘আমরা তাঁকে অপরাধী হিসেবে ধরেছি, তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে, তবে এখনো আমরা তাঁর কোনো পরিচয় নিশ্চিত হতে পারিনি।’

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির কর্মকর্তা রেজাউল মাসুদ বলেন, সামাজিক মাধ্যমে নাটবল্টুর ভিডিওটি ছড়িয়ে তিনি মূলত পদ্মা সেতু নিয়ে তুচ্ছ–তাচ্ছিল্য করেছেন। এটা অন্তর্ঘাতমূলক অপরাধ। তিনি সাধারণ মানুষের অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন এবং রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন।