অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণের নিবন্ধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, একই সঙ্গে বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র বাবদ সরকারের কাছে পত্রিকাগুলোর পাওনা পরিশোধের বিষয়েও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ের তথ্য মন্ত্রণালয়ে সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। বৈঠকে বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকেরা অংশ নেন। বৈঠকে সম্পাদকদের পক্ষ থেকে পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণের নিবন্ধনের দ্রুত ব্যবস্থা করা এবং সরকারের কাছে পত্রিকাগুলোর বিজ্ঞাপনবাবদ পাওনা পরিশোধ করাসহ বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা তুলে ধরে তা সমাধানের অনুরোধ করা হয়।
বৈঠকে আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমত সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে নিয়মিতই বৈঠক হয়। আজকেও সে রকম একটি বৈঠক হয়েছে। আজকে বিশেষত আলোচনা হয়েছে পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণের নিবন্ধন যাতে শিগগির দেওয়া হয়। তাঁরাও (তথ্য মন্ত্রণালয়) মনে করেন যেসব পত্রিকা বের হয় বিশেষ করে প্রধান পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণের নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব বেশি তদন্তের প্রয়োজন নেই। কারণ ইতিমধ্যে তদন্তের পরই পত্রিকাগুলো বের হয়েছে। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণের নিবন্ধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, পত্র-পত্রিকার অনেক বিল বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। সব মিলিয়ে কয়েক শ কোটি টাকার বিল আটকে আছে। সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যাতে বিলগুলো তাড়াতাড়ি ছাড় করা হয়। তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাগিদ পত্র দেওয়া হবে। কারণ ইতিপূর্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এই বিল ছাড় করার জন্য সব মন্ত্রণালয় ও দপ্তরকে তাগিদপত্র দেওয়া হয়েছিল। সেই আলোকে তথ্য মন্ত্রণালয়ও তাগিদপত্র দিয়েছিল। তাতে করে কিছু বিল ছাড়ও হয়েছে। কিন্তু বকেয়া বিলের তুলনায় যে পরিমাণ ছাড় হয়েছে সেটি কম। এ জন্য আরেকটি তাগিদপত্র দেওয়া হবে।
বিলগুলো শিগগির দিয়ে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এগুলো দিতে হবেই। এখন যেহেতু পত্র-পত্রিকাগুলো সংকটে আছে, তাই এখন দিলে বেশি কাজে আসবে।
এ সময় সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, তাঁরা মূলত গণমাধ্যমের যে সংকট আছে সেটি কীভাবে সমাধান করা যায় এবং নতুন জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালার পর কত দ্রুত সময়ে মূলধারার পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণ নিবন্ধন করা যায় সেটি নিয়ে কথা বলেছেন। তথ্যমন্ত্রীও দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত সারা পৃথিবীতে গণমাধ্যম এখন সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, এই সংকট সমাধানে সচেষ্ট থাকবেন এবং সহায়তা করবেন।
বৈঠকের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার মহামারিতে মূলধারার গণমাধ্যম অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাঁরাও সংকটের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। সংকট সত্ত্বেও পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে, সারা দেশে বিলি করা হচ্ছে। এ জন্য তিনি সম্পাদক পরিষদকে ধন্যবাদ জানান। সবচেয়ে বড় কথা হলো করোনার মধ্যেও সরকার, সংবাদপত্র-গণমাধ্যম একযোগে কাজ করেছে। এ জন্য গুজব রটানোর চেষ্টা হলেও হালে পানি পায়নি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি নিজেই গণতন্ত্রের জন্য বাধা।
বৈঠকে সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, ডেইলি সানের সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ। আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য সচিব কামরুন নাহার।