আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দেখে ব্যবসায়ী মো. রানা ও তাঁর পাঁচ বন্ধু মিলে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড়ে ১২টি মোটরসাইকেল অর্ডার করেন। তিন মাস চলে গেলেও এখনো পণ্য বুঝে পাননি তাঁরা। অর্ডার দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল, ২০ কর্মদিবসে ডেলিভারি সম্পন্ন হবে। এখন মূল টাকা ফেরত পাওয়া নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে গ্রাহকদের মধ্যে।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে মো. রানা এই অভিযোগ করেন। সকালে ই-অরেঞ্জ থেকে মোটরসাইকেল ও ভাউচার না পাওয়া ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধনে মো. রানার মতো শতাধিক ভুক্তভোগী অংশ নেন। ভুক্তভোগীরা দ্রুত পণ্য অথবা অর্থ ফেরত দেওয়ার দাবি জানান।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের ভাষ্য, কষ্টের টাকায় মানুষ সাশ্রয়ে পণ্য কেনার জন্য ই-অরেঞ্জ থেকে অর্ডার করেছিলেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠান থেকে এখন পণ্য প্রাপ্তির সুযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ। করোনায় কর্ম হারিয়ে ঘরে বসে লাভের আশায় অনেকে ধার-দেনা করেও অর্ডার করেছিলেন। এখন অবস্থা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।
ব্যাংক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ৩০ লাখ টাকায় বাইক ও নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্য অর্ডার করেছিলেন। মিজানুর রহমান বলেন, ‘বনানী থানার পুলিশ পরিদর্শক শেখ সোহেল রানার বোন ও ভগ্নিপতি চালাতেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ। তাঁরা এখন অভিযোগ অস্বীকার করছেন। তাহলে আমাদের পণ্য কে দেবে? ভুক্তভোগীদের পণ্য অথবা অর্থ ফেরত দিতে প্রধানমন্ত্রী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
আরেক ভুক্তভোগী কাজী আদনান বলেন, ‘তিন বন্ধু আস্থা রেখে আমার অ্যাকাউন্ট থেকে ১৯টি বাইক অর্ডার দিয়েছিলেন। এখন তাঁরা চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের অর্ডার ছিল ২০ লাখ ৮০ হাজার টাকার। অনেকে কোটি টাকা পর্যন্ত অর্ডার দিয়েছেন। আন-অফিশিয়াল প্রায় ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকার ওপর আত্মসাৎ করেছেন এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।’
প্রতিষ্ঠানটির হয়ে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্তজার বিজ্ঞাপন দেখে আস্থার জায়গা থেকে দুটি মোটরসাইকেলের অর্ডার করেছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী তারিকুল ইসলাম। তিনি জানান, পুরোনো বাইক বিক্রি করে নিজের ও ছোট ভাইয়ের জন্য ১ লাখ ৮৫ টাকায় দুটি বাইক অর্ডার দিয়েছিলেন।
তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাশরাফি যখন কিছু বলেন, আমরা আস্থা রাখি। আমরা জানি, এটি বিজ্ঞাপন। তবু আমরা মাশরাফির সহায়তা চাই।’
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা অভিযোগ করে বলেন, সকালে ই-অরেঞ্জের গুলশান অফিসের সামনে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। পরে তাঁরা মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে আসেন।