প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে প্রচারিত এই ওয়েবিনারের আয়োজক ছিল ডমেক্স।
উন্নয়নের জন্য নিরাপদ স্যানিটেশনের কোনো বিকল্প নেই। উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন করতে গেলেও নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সরকারকে এখানে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
বিশ্ব টয়লেট দিবস উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
‘নিরাপদ স্যানিটেশনের জন্য আমাদের লড়াই চলছে: বিশ্ব টয়লেট দিবস ২০২০’ শীর্ষক এই ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে প্রচারিত এই ওয়েবিনারের আয়োজক ছিল ডমেক্স। সহযোগিতায় ছিল ইউনিলিভার, ব্র্যাক, ২০৩০ ডব্লিউআরজি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ, ভূমিজ ও ওয়াটারএইড। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন একটি টেলিভিশনের উপস্থাপক জুলহাজ জুবায়ের।
অভিযোগ না করে পাবলিক টয়লেটকে পরিবেশবান্ধব করতে এগিয়ে আসতে হবে। সবাই মিলে কাজ করলে নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থা গড়া সম্ভব।ফারহানা রশীদ, ভূমিজের সহপ্রতিষ্ঠাতা
ওয়াটারএইড বাংলাদেশের পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর পার্থ হেফাজ শেখ বলেন, ‘উন্নয়নের সঙ্গে নিরাপদ স্যানিটেশন জড়িত। এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে নিরাপদ স্যানিটেশনের বিকল্প নেই। সরকারের যে বাজেট আছে, তা যথেষ্ট নয়। উন্নতি করতে গেলে নিরাপদ স্যানিটেশনের জন্য আরও বিনিয়োগ করতে হবে।’ তিনি বলেন, স্যানিটেশনকেন্দ্রিক স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলা করতে নিরাপদ স্যানিটেশন গুরুত্বপূর্ণ।
উন্নত দেশগুলোতে উন্নয়নের সঙ্গে নিরাপদ স্যানিটেশনের যোগ রয়েছে বলে জানান হোম কেয়ার ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের মার্কেটিং ডিরেক্টর তানজীন ফেরদৌস। তিনি বলেন, প্রতিটি ব্র্যান্ডের একটি উদ্দেশ্য থাকে। ডমেক্সেরও একটা দায়িত্ব রয়েছে। সে লক্ষ্যেই ডমেক্স কাজ করে যাচ্ছে। তিনি জানান, ঢাকার পাঁচটি কাঁচাবাজারে ভূমিজের সঙ্গে স্যানিটেশন ব্যবস্থার কাজ করছে ইউনিলিভার। এসডিজি অর্জন করতে হলে এখানে প্রচুর কাজ করার সুযোগ আছে। যত দিন না নিরাপদ স্যানিটেশন হচ্ছে, তত দিন লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
পাবলিক স্যানিটেশন ব্যবস্থায় সেবার মনোবৃত্তি নিয়ে কাজ করার কথা বলেছেন ব্র্যাকের ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর মো. লিয়াকত আলী। তিনি বলেন, ‘এখনো শহরের অনেক মানুষ নিরাপদ স্যানিটেশনের বাইরে। বস্তিগুলোতে তা আরও কম। সুন্দর সুন্দর টয়লেট বানালেই হবে না, তার সুন্দর ব্যবস্থাপনাও থাকতে হবে। সবাইকে সেবার মনোবৃত্তি নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। স্যানিটেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকেও নজর দিতে হবে।’ তিনি বলেন, পাবলিক টয়লেটের জন্য যথেষ্ট জায়গা পাওয়া যায় না। তিনি এ ক্ষেত্রে ফিলিংস্টেশনগুলোকে কাজে লাগানোর কথা বলেন।
মো. লিয়াকত বলেন, ‘মানুষকে সেবা দিতে পারলে মানুষ পয়সা দেবে। নারীবান্ধব ছাড়াও সমাজের সব ধরনের মানুষের ব্যবহারযোগ্য স্যানিটেশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।’
স্যানিটেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া দরকার উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংকের ২০৩০ ডব্লিউআরজি, ওয়াটার জিপি রিজিওনাল কো-অর্ডিনেটর সায়েফ তানজীম বলেন, শহরের স্যানিটেশন পরিস্থিতি নিয়ে আরও কাজ করার আছে। নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থা বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শহর বড় হচ্ছে কিন্তু সুয়ারেজ ব্যবস্থা এখনো অপ্রতুল।
ভূমিজের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ফারহানা রশীদ বলেন, সবার সহযোগিতায় পাবলিক টয়লেটকে পরিবেশবান্ধব করা সম্ভব। সব সময় অভিযোগ না করে নিজেরাই সমাধানের জন্য এগিয়ে আসতে হবে। সবাই মিলে কাজ করলে নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থা গড়া সম্ভব।