সমাজে নারী–পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠিত না হলে টেকসই উন্নয়ন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন, নারী–পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই নারীর প্রতি সহিংসতা দূর করা সম্ভব। এই সমতা প্রতিষ্ঠায় অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়ন ও নারীকে সম্পত্তির অধিকার দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে ফওজিয়া মোসলেম এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ৬৬টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি ‘নারী–পুরুষের সমতা, টেকসই আগামীর মূল কথা’ শিরোনামে এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন, ‘নারী আন্দোলন শক্তিশালী হলেও সেই তুলনায় নারীর প্রতি সহিংসতা কমে আসছে না। এর অন্যতম কারণ হলো, নারীকে অধস্তন বলে ভাবা ও মানুষ বলে মনে না করা। এসবের অবসান ঘটিয়ে আমরা নারী-পুরুষের সমতার সমাজ গড়ে তুলব। নারীসমাজের সমতা প্রতিষ্ঠিত হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার হাত ধরে। নারী-পুরুষের সমতা না হলে টেকসই উন্নয়ন হবে না। সমগ্র জাতিকে এই সমতার পক্ষে দাঁড়াতে হবে। লিঙ্গনির্বিশেষে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এই সমতা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
নারী–পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠার পথে কিছু বাধার কথা তুলে ধরে ফওজিয়া মোসলেম বলেন, সমতার আন্দোলনের পথে বাধাগুলোর মধ্যে আছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা, সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে বাধা, নারী–পুরুষের সম্পর্ক ও শ্রমবিভাজনের ক্ষেত্রে বাধা ইত্যাদি। নারী–পুরুষের শ্রমে কোনো বিভাজন থাকা যাবে না, সম্পর্কে সমতা থাকতে হবে। এর জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন করতে হবে, নারীকে সম্পত্তির অধিকার দিতে হবে। এর মধ্য দিয়েই নারীর প্রতি সহিংসতা দূর হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কর্মসূচির ঘোষণাপত্র পড়ে শোনান গণসাক্ষরতা অভিযানের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার রেহানা বেগম। এতে সরকারের কাছে ২০ দফা দাবি জানানো হয়।
হাত তুলে ঘোষণাপত্রের দাবি ও বক্তব্যের সঙ্গে একাত্মতা জানান ৬৬ সংগঠনের সদস্যরা। এর আগে সাংস্কৃতিক আয়োজনে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ছায়া কর্মকার ও নবনীতা চৌধুরী, নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পী অঙ্কিতা সাহা। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন বাচিক রেপার্টরি সংগঠন পঞ্চকন্যার সদস্যরা। কর্মসূচি শেষে শহীদ মিনার থেকে শোভাযাত্রা বের করেন ৬৬ সংগঠনের সদস্যরা। শোভাযাত্রাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।