নতুন মাদক ‘ব্রাউনি কেক’, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্র গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

এলএসডি (লাইসার্জিক অ্যাসিড ডায়েথিলামাইড) মাদক সেবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাফিজুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে গিয়ে এবার নতুন ধরনের মাদক ‘ব্রাউনি কেক’–এর সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। এ ধরনের মাদক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে গত বুধবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া তিন ছাত্র হলেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) কাফিল ওয়ারা রাফিদ, ধানমন্ডির অ্যাডভান্সড প্রফেশনালস চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিংয়ের কাজী রিসালাত হোসেন ও ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভের (ইউডার) চারুকলা বিভাগের সাইফুল ইসলাম। সম্প্রতি এলএসডি মাদক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও আট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। বর্তমানে তাঁরা কারাগারে আছেন। তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।

গাঁজার নির্যাস থেকে তৈরি ক্ষতিকর মাদক ব্রাউনি কেক। নতুন এই মাদক কারবারের পুরো চক্রকে ধরতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রকে দুদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সিএমএম) ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনুর রহমান তাঁদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ব্রাউনি কেক মাদক উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে ডিবির রমনা জোনের উপকমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাফিজুরের মৃত্যুরহস্য উদ্‌ঘাটন করতে গিয়ে চরম ক্ষতিকর মাদক এলএসডির সন্ধান পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় কয়েকজন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যায়, উচ্চবিত্ত পরিবারের বেড়ে ওঠা অনেক তরুণ মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছেন। এলএসডি কিংবা ব্রাউনি কেকের মতো ক্ষতিকর মাদকে তাঁরা আসক্ত হয়ে পড়েছেন। ব্রাউনি কেক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজিমুল হক আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, উচ্চবিত্ত পরিবারের তরুণেরা অনলাইনে ব্রাউনি কেক কেনাবেচায় লিপ্ত।

গত ১৫ মে থেকে নিখোঁজ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাফিজুর রহমান। এর আট দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে তাঁর লাশ শনাক্ত করা হয়। তাঁর মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে এলএসডির সন্ধান পায় ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ। ডিবি জানায়, হাফিজুরকে তাঁর বন্ধুরা এলএসডি সেবন করান। এরপর তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে এক ডাব বিক্রেতার দা কেড়ে নিয়ে নিজের গলায় চালিয়ে দেন। এর কয়েক ঘণ্টা পর তাঁর মৃত্যু হয়। ডিবির এই বক্তব্যের পর এলএসডি আলোচনায় আসে।

ডিবি পুলিশের দাবি, যে তিন বন্ধু হাফিজুর রহমানকে এলএসডি সেবন করিয়েছেন, তাঁরা পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।