প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ধামাকা শপিং’-এর সিওও (চিফ অপারেটিং অফিসার) সিরাজুল ইসলামসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁওসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক (এএসপি) আ ন ম ইমরান খান আজ বুধবার সকালে প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করা হবে।
র্যাব সূত্র জানায়, টঙ্গী পশ্চিম থানার উত্তর আউচপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. শামীম খান ২৩ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম ডি জসিমউদ্দিন চিশতীসহ (৫৭) কয়েকজনের বিরুদ্ধে টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা করেন। তিনি পোশাক কারখানার পার্টস ব্যবসায়ী।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এম আলী ওরফে মোজতবা আলী (৬০), সিওও সিরাজুল ইসলাম (রানা), প্রধান ব্যবসা কর্মকর্তা দেবকর দে শুভ (৩২), হেড অব অ্যাকাউন্টস সাফোয়ান আহমেদ (৪১), উপব্যবস্থাপক আমিরুল হোসাইন (৪৬), সিস্টেম ক্যাটাগরি হেড ইমতিয়াজ হাসান (৩৫), ভাইস প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম স্বপন (৩৫), উপব্যবস্থাপনা পরিচালক নীরদ বরণ রায় (৪৫), প্রতিষ্ঠানের কর্মী নাজিম উদ্দিন আসিফ (২৮) ও আসিফ চিশতী (২৬)।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২০ মার্চ অনলাইনে ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড পরিচালিত ধামাকা শপিং ডটকমের ফেসবুক পেজে বিভিন্ন ভার্চ্যুয়াল সিগনেচার কার্ডের মাধ্যমে পণ্য কেনার অফার দেওয়া হয়। শামীম খান অনলাইনে অফারটি দেখে প্রতিষ্ঠানের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করেন। যোগাযোগ করার পর তাঁকে জানানো হয়, অর্ডার করলে ৪৫ দিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহ করা হবে। সে অনুযায়ী ৮৪টি ইনভয়েসের মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠানে ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটি তাঁর অর্ডার কনফার্ম করে এবং কনফার্ম ইনভয়েস জিমেইল আইডিতে পাঠায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান থেকে নির্ধারিত ৪৫ দিনেও পণ্য সরবরাহ করা হয়নি। ৫০ দিন পর হেল্পলাইনে যোগাযোগ করলে অপেক্ষা করতে বলে। এক মাস অপেক্ষা করার পর প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকের (অপারেশন) স্বাক্ষর করা একটি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকার দুটি চেক দেওয়া হয়। ওই চেক নিয়ে টাকা তুলতে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই। গত ৫ আগস্ট প্রতিষ্ঠানের সিওও সিরাজুল ইসলামের কাছে যাওয়ার পর তিনি টাকা না দিয়ে তাঁকে হুমকি দেন। পরে ৫ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অফিসে গিয়ে দেখেন অফিস তালাবন্ধ।
মামলায় বলা হয়েছে, এ সময় শামীম খান বুঝতে পারেন, তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। তাই টাকা পরিশোধের ইনভয়েজ, ব্যাংকের চেকের ফটোকপিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে মামলা করেন।