মার্কেট খুলে দেওয়ার দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত চাঁদনী চক শপিং কমপ্লেক্সের সামনে বিক্ষোভ করেন ব্যবসায়ী ও দোকানমালিকেরা। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা দিনের নির্দিষ্ট একটা সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট খোলা রাখার দাবি জানান। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারের বিধিনিষেধের কারণে এসব দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কামাল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘সরকার ভাবুক, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান না টিকলে দেশও টিকবে না। আমরা নির্দিষ্ট একটা সময় মার্কেট খোলা রাখতে চাই। রমজানে দোকান খোলা না থাকলে কী হবে, জানি না। গত বছরের ক্ষতিই পুষিয়ে উঠতে পারিনি।’ এ কথা বলেই কেঁদে ফেলেন গ্লোব শপিং কমপ্লেক্সের এই ব্যবসায়ী।
দিলশাদ আফরিন একজন নারী উদ্যোক্তা। তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছেন বিক্ষোভে যোগ দিতে। সেখানে তাঁর একটি কাপড়ের কারখানা আছে। দিলশাদ নিউমার্কেট ও চাঁদনী চকের বিভিন্ন দোকানে কাপড় সরবরাহ করেন বলে জানিয়েছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমার মতো হাজারো নারী উদ্যোক্তা ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। উদ্যোক্তা হয়েছে। অনেক নারী উদ্যোক্তাই এখন খেয়ে না খেয়ে আছে।’ এ অবস্থায় মার্কেট বন্ধ থাকলে তাঁদের ঋণ শোধ কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে জানান তিনি। দিলশাদ অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকার নাকি নারীদের বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে। আমরা তো সেসব সুবিধা পাচ্ছি না।’
চাঁদনী চক বিজনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের সাধারণ ছুটি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ধাক্কা জানুয়ারি মাস থেকে একটু একটু করে সামলে উঠছেন তাঁরা।
মনির হোসেন আরও বলেন, ‘আমাদের কাপড়টা পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে যাবে। তারপর কাস্টমাররা কিনবেন, তারপর টেইলরের কাছে বানাতে দেবে। আমাদের পিক আওয়ার এখন।’
মনির হোসেন জানান, থ্রিপিস এবং অন্যান্য জামা ১০ থেকে ১৫ রোজার পর আর বিক্রি হয় না। কারণ, টেইলরের কাজ থাকে পরে। টেইলর যদি অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দেন, তখন তাঁদের কাপড়ও কেউ কিনবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা যে বিনিয়োগ করেছি, সেই টাকা কাপড় প্রস্তুতকারী, ব্যাংকের ঋণ, দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন, পারিবারিক খরচ—এগুলোর পেছনে খরচ করা হয়। সব মিলিয়ে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত। এমনকি আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা রাষ্ট্রীয় প্রণোদনাও পাই না।’