কার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ) প্রস্তাবিত খসড়াটি নাগরিক সমাজের আলোচনায় যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছে। এ নিয়ে তর্কবিতর্ক হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে ড্যাপের খসড়া নিয়ে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি এবং কমনওয়েলথ অ্যাসোসিয়েশন অব আর্কিটেক্টসের সহসভাপতি জালাল আহমেদ-এর মতামত (পরিমার্জিত আকারে) প্রকাশ করা হলো—
ঢাকা মহানগরীর জন্য প্রণীত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনাটি ২০৩৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার পরিকল্পিত নগরায়ণ নিশ্চিত করার গুরুত্বপূর্ণ দলিল। কিন্তু খসড়া পড়ে মনে হচ্ছে, পরিকল্পনাটি একুশ শতকে দেশের সার্বিক অগ্রযাত্রার উপযোগী আধুনিক ও টেকসই মহানগর হিসেবে রাজধানী ঢাকাকে গড়ে তোলার জন্য সরকারের ‘ভিশন ২০৪১’-এর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এতে বরং বর্তমান অপরিকল্পিত ও অরাজক অবস্থার বৈধতা দেওয়ার ঝোঁকই বেশি।
ঢাকার অধিকাংশ রাস্তা ২০ ফুটের কম প্রশস্ত বলে এ পরিকল্পনায় সরু রাস্তার পাশেও ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদন দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হবে জনবান্ধব নীতি। কিন্তু এসব সরু রাস্তায় দুর্যোগকালে কি অগ্নিনির্বাপক দল বা অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে পারবে? ১৯৫৩ সালের নগর উন্নয়ন আইনে (টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্ট) কিন্তু বলা আছে, রাস্তার প্রশস্ততা বাড়াতে ও সড়ক সরল করতে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে হাউজিং প্রকল্প করবে।
ড্যাপের খসড়ায় উদ্ভিদ ও প্রাণবৈচিত্র্য এবং হাইড্রোলজিক্যাল মডেলের দেখা মেলে না।
ইমারতের উচ্চতা নিয়ন্ত্রণ করে নয়, বরং বিকেন্দ্রীকরণ করেই জনঘনত্ব কমানো সম্ভব।
পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা এবং সবার সুচিন্তিত মতামত ড্যাপে সন্নিবেশিত হওয়া প্রয়োজন।
অপরিকল্পিত ও অরাজক অবস্থার বৈধতা দেওয়ার ঝোঁকই খসড়া ড্যাপে বেশি।
আধুনিক নগরীর জন্য অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, নান্দনিক, নৈসর্গিক, নাগরিক, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদিসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অবশ্যই বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় সংক্ষেপে অন্তর্ভুক্ত থাকা জরুরি। কিন্তু দলিলটিতে বহু ক্ষেত্রে গবেষণালব্ধ তথ্য বা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের বদলে ব্যক্তিগত মত প্রাধান্য পেয়েছে।
চলমান কোভিড, চুড়িহাট্টার আগুন, সাভারের ভবনধস, ভূমিকম্পে আশু কর্তব্য পরিকল্পনা, ২০-৩০ মিলিমিটার বৃষ্টির পানি অপসারণ, মৌলিক স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষা, উন্মুক্ত স্থান ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের যথাযথ উপস্থাপনা এতে প্রায়ই উপেক্ষিত।
বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনাটিতে উদ্ভিদ ও প্রাণবৈচিত্র্য এবং হাইড্রোলজিক্যাল মডেলের দেখা মেলে না। অবকাঠামো পরিকল্পনা কী হবে, তারও পরিষ্কার ধারণা নেই। পানি সরবরাহ, পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, আবর্জনার ব্যবস্থাপনা, ফুটপাতের নেটওয়ার্ক, ফায়ার হাইড্রেন্টে সংযোগ, বাজারের অবস্থান ইত্যাদি বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় একেবারেই অনুপস্থিত।
বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় ছয় শতাধিক বিদ্যালয়ের প্রস্তাব আছে, সেসবের জন্য জমি নির্ধারিত করে দেওয়া হয়নি।
এ দলিলে ইমারতের উচ্চতার ওপর আরোপিত নিয়ন্ত্রণ বিদ্যমান ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮-এর পরিবর্তে অতীতের অকার্যকর ১৯৯৬ সালের ইমারত নির্মাণ বিধিমালাটি আবার চালুর একটি প্রয়াস। এটি প্রক্রিয়াধীন বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডে (বিএনবিসি) বর্ণিত এবং নগরের উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণের জন্য আধুনিক বিশ্বে স্বীকৃত ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর) ও ভূমি আচ্ছাদনসহ বিভিন্ন নীতিমালার পরিপন্থী।
বলা হচ্ছে, ভবনের উচ্চতা নিয়ন্ত্রণ করলে নগরীর জনঘনত্ব কমবে। লালবাগ সবচেয়ে জনবহুল এলাকা। অধিকাংশ ভবনের উচ্চতা সেখানে তিন থেকে চারতলা। তাহলে লালবাগের জনঘনত্ব ঢাকার সবচেয়ে বেশি হয় কীভাবে? লালাবাগ ঢাকার অন্যতম প্রাচীন এলাকা। এর রাস্তার দুই পাশে ছড়ানো-ছিটানো ইতিহাসে সমৃদ্ধ নিদর্শন। এগুলোর সঙ্গে ভূমি পুনর্বিন্যাস প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়েই বহুতল ইমারত, ঐতিহাসিক স্থাপনা, খোলা চত্বর, দুই লেনের সীমিত এক বা দ্বিমুখী যান চলাচলের রাস্তাসহ বিদ্যমান অপ্রাতিষ্ঠানিক বাজার একীভূত করে একটি সাংস্কৃতিক অঞ্চলে রূপ দেওয়া সম্ভব। চার-পাঁচটি রাস্তা দিয়ে বুড়িগঙ্গা নদীকে মূল শহরের সঙ্গে সংযুক্ত করা যায়।
ভবনের উচ্চতা নিয়ন্ত্রণ করে ঢাকা নগরীর ৩.৬ শতাংশ হারে বাড়তি জনসংখ্যা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, তা বোধগম্য হচ্ছে না। হিতে বরং বিপরীত হবে। নগরীতে বাড়িভাড়া বাড়বে এবং মানুষ সাবলেট করে গাদাগাদি বসবাস করবে। ফলে নগরীর বেশির ভাগ এলাকাই লালবাগের চেয়েও বেশি জনঘনত্বে পৌঁছাবে। বহু এলাকা হংকংয়ের কুখ্যাত কেইজ হোমের মতো ইট-পাথরের বস্তিতে পরিণত হবে।
ঢাকার জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে ইমারতের উচ্চতা নিয়ন্ত্রণ করে নয়, বরং ঢাকার চারপাশে বিদ্যমান শহরগুলোর সঙ্গে কমিউটার লাইট রেল এবং এলিভেটেড রোডের মাধ্যমে যুক্ত করতে হবে। ঢাকাকে প্রাণকেন্দ্র হিসেবে সক্রিয় রেখে, বিকেন্দ্রীকরণ করেই জনঘনত্ব কমানো সম্ভব।
ঢাকার প্রায় ৪০ লাখ মানুষ বস্তিতে বসবাস করে। বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার একটি মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত ছিল নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাসের জন্য সাশ্রয়ী আবাসনকে উৎসাহিত করা। কিন্তু প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় এ নিয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। বিদ্যমান বস্তি এলাকার ১০ শতাংশ এলাকায় ভাড়াভিত্তিক বহুতল ভবন করে বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন নিয়ে ভাবা উচিত। সেখানে পর্যাপ্ত সবুজ চত্বর, অপ্রাতিষ্ঠানিক হকার মার্কেট, উন্মুক্ত পরিসরও থাকতে হবে।
ঢাকার জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ অন্য জেলা থেকে আগত। তাদের বেশির ভাগই ভাড়া বাড়িতে থাকে। ঈদে জনশূন্য ঢাকায় তার প্রমাণ মেলে। এ কারণে প্রতিবছর গড়ে ৫ লাখ করে মানুষ বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে পর্যাপ্ত বাসস্থানের ব্যবস্থা না করতে পারলে ফ্ল্যাটের দাম নিশ্চিতভাবে বাড়বে। আর সেটি সীমিত আয়ের নাগরিকদের ওপর বাড়তি বাড়িভাড়ার অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে।
প্রস্তাবিত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় ব্লক ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে ইমারতের উচ্চতার ওপর ছাড় দেওয়া হয়েছে। ব্লক ডেভেলপমেন্ট আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে জনবান্ধব। প্রকৃতপক্ষে এর ফলে প্রভাবশালী রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলো ঢাকা নগরীর বড় জমির মালিক হয়ে অনিয়ন্ত্রিত উচ্চতার সুবিধা নিয়ে লাভবান হবে। ছোট জমির মালিক ও ছোট রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলো ছোট জমিতে ভবনের উচ্চতা নিয়ন্ত্রণের আওতায় পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
প্রস্তাবিত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় তথ্য-উপাত্তের ফাঁক প্রচুর। কী করে বলা হচ্ছে যে, এ শহরে (রাজউক এলাকার) ৮৪ শতাংশ বাড়িই একতলা? সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলাভিত্তিক বিদ্যমান জিআইএস ডেটা বিশ্লেষণ করেই? সব কটি প্রশাসনিক এলাকার ঘনত্ব, হাউজিং স্টক, ফ্লোর ব্যবহারের বিদ্যমান তথ্য-উপাত্ত সম্পর্কে পরিষ্কার কোনো ধারণা এতে পাওয়া যায় না।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বিবেচনা করে ভবিষ্যতে লোকসংখ্যা কত হবে, চাহিদা কেমন হবে—এসব যথাযথ তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেই বলা উচিত ছিল। বিদ্যমান ওয়ার্ডভিত্তিক সেবার সঙ্গে এ পরিকল্পনাটির সম্পর্ক কী, তা-ও এ পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়া উচিত। প্রতিটি ওয়ার্ডের বিশদ নগর-নকশার ধারণাও এতে নেই।
বলা হচ্ছে মানুষের মতামত নিয়ে এ পরিকল্পনা করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ওয়ার্ডভিত্তিক চাহিদার বিপরীতে সুযোগ-সুবিধার তালিকা, মৌজাভিত্তিক প্রস্তাব, পরিকল্পনা ও নকশার মতো বিষয়গুলো এতে থাকা উচিত ছিল।
বিশেষজ্ঞরা ঢাকা মহানগরীতে বন্যা ও ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগের আশঙ্কার কথা বলেন। এ মুহূর্তে অনেকগুলো রাস্তা প্রশস্ত করার পাশাপাশি একটা প্রাথমিক নগর যোগাযোগ পরিকল্পনা গড়ে তোলা প্রয়োজন। ১৫৮টি নোডাল পয়েন্টের ওপর কোনো যানজট বিশ্লেষণ হয়েছে কি?
বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা ঢাকার জন্য প্রণীত কাঠামোগত পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপের দলিল। সে কারণেই প্রশ্ন ওঠে, এখনো যেখানে কাঠামোগত পরিকল্পনাই চূড়ান্ত বলে গৃহীত হয়নি, সেখানে এই বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনাটির আইনি ভিত্তি কী? পরিকল্পনাবিদ ও স্থপতিদের সমন্বয়ে ঢাকার ওয়ার্ডভিত্তিক ডিজাইন সেল তৈরি করে স্থানীয় সমস্যাগুলো ওয়ার্ডের মধ্যেই সমাধান করা যেতে পারে।
ইতিমধ্যে প্রণীত কাঠামোগত পরিকল্পনাটি এই বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার মাধ্যমে কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা সবার জানা দরকার। এ-ও জানা দরকার, ২০১০ সালে অনুমোদিত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা কত দূর বাস্তবায়িত হয়েছে এবং তার কোন অংশ নতুন প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় অবশ্যই আগেরটির বিশ্লেষণ ও ধারাবাহিকতা থাকতে হবে।
বর্তমান দলিলটি নগর উন্নয়ন আইনের অধীনে প্রণীত হয়েছে। আমরা লক্ষ করছি, এর অনেক প্রস্তাব সরকারের ইমারত নির্মাণ আইনের অধীনে প্রণীত বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড, ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮, জলাধার আইনের অনেক ধারাকে লঙ্ঘন করছে। এতে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হবে। বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার প্রস্তাবের কোনো মৌজা-তফসিল তৈরি করা হয়নি বলেই মনে হচ্ছে। সে তফসিল ছাড়া কীভাবে নগর উন্নয়ন আইনের আওতায় গেজেট করা হবে?
যে টার্মস অব রেফারেন্সের ভিত্তিতে এই বিশাল বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা প্রণয়নের পরামর্শক নিয়োজিত হয়েছে, তাঁরা তার কতটা মেনে এটি প্রণয়ন করেছেন, তাও খতিয়ে দেখা দরকার। দেশের রাজধানীর পরিকল্পনাসংক্রান্ত এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে দলনেতার ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা সংবাদমাধ্যমে এই প্রকল্পের দলনেতার কোনো বক্তব্য শুনিনি।
বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, সারা ঢাকা শহরের মাত্র ৪ শতাংশ ইমারতের নকশা বৈধ এবং ৯৬ শতাংশ অবৈধ। রাজউকের ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ তিনটি পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান আইএবি, আইইবি, রিহ্যাব ও বাপার সক্রিয় ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রণীত হয়েছিল। এই বিধিমালায় বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর), ভূমি আচ্ছাদন নিয়ন্ত্রণ, প্লট একীভূতকরণকে উৎসাহিত করা, রাস্তা প্রশস্ত করাকে উৎসাহিত করা, সর্বজনীন গম্যতা, অগ্নিনিরাপত্তা ইত্যাদি জনবান্ধব বিষয় উল্লেখ না করে কোনো কোনো মহল ঢাকা মহানগরীর অনিয়ন্ত্রিত উন্নয়নের জন্য ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালাচ্ছে। বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় বর্ণিত ৯৬ শতাংশ অবৈধ ভবনই প্রমাণ করছে যে রাজউক বিধিমালা ২০০৮ যথাযথভাবে প্রয়োগ না করাতেই ঢাকা কীভাবে অপরিকল্পিত নগরী হিসেবে বেড়ে উঠেছে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, অতীতের পরিকল্পনাগুলো আলোর মুখ দেখতে না পাওয়ার মূল কারণ রাজউক তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যও রাজউকের সক্ষমতা কীভাবে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে পরিষ্কার দিকনির্দেশনা জরুরি। আগামী ১৫ বছরে পরিকল্পনাটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত না হলে সে ব্যর্থতার দায় কে নেবে?
সাম্প্রতিক দুটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশের নগরায়ণের ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে —বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড এবং ঢাকার জন্য প্রস্তাবিত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা। দীর্ঘ সময় ধরে তিনটি কারিগরি পেশাজীবী সংগঠনের মতামত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড প্রণীত হয়েছে। স্থপতি, নগর-পরিকল্পনাবিদ, প্রকৌশলী, বিভিন্ন অংশীজন ও নাগরিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাই বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা এবং সবার সুচিন্তিত মতামত এতে সন্নিবেশিত হওয়া প্রয়োজন।
জনসাধারণের অবগতির জন্যও এটি উন্মুক্ত রাখা বিশেষ প্রয়োজন।
● জালাল আহমেদ সভাপতি, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট