‘দুই দোকানির বিরোধ’ থেকে জড়ানো হয় ঢাকা কলেজের ছাত্রদের

রাজধানীর নিউমার্কেটের দোকানমালিক–কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল নিউমার্কেটের দুই দোকানকর্মীর বিরোধ থেকে।
রাজধানীর নিউমার্কেটের দোকানমালিক–কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল নিউমার্কেটের দুই দোকানকর্মীর বিরোধ থেকে।

ঘটনা সোমবার সন্ধ্যার। ইফতারের সময় টেবিল বসানো নিয়ে নিউমার্কেটের দুটি খাবারের দোকানের কর্মীদের মধ্যে বিরোধ হয়। এর জেরে ওয়েলকাম ফাস্ট ফুড নামের একটি খাবারের দোকানের কর্মচারী বাপ্পীকে মারধর করেন ক্যাপিটাল ফাস্ট ফুডের কাওসার। প্রতিশোধ নিতে বাপ্পী ঢাকা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে কাওসারের ওপর হামলা করেন। কাওসারের লোকজন শিক্ষার্থীদের মারধর করে বের করে দেন। এর জরে ধরেই রাতে শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেটের দিকে এগিয়ে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিউমার্কেটের ভেতর দুই দোকানদারের মধ্যে ঝামেলা হয়। এর জেরেই এক পক্ষ ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসে। এতে করে দুই পক্ষের মধ্যে ধ্বস্তাধ্বস্তি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। ওই সময় শিক্ষার্থীরা চলে যান। এরপর তাঁরা গুজব ছড়ান ব্যবসায়ীরা শিক্ষার্থীদের মারধর করেছেন, কুপিয়ে জখম করেছেন। পরে তাঁরা নিউমার্কেটে এসে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করার চেষ্টা করেন।

ওয়েলকাম ফাস্ট ফুডের মালিক মো. রফিক প্রথম আলোকে বলেন, বাপ্পীকে মারধরের পর বিষয়টি নিয়ে বসার কথা ছিল। কিন্তু বাপ্পী এর আগে তাঁর পরিচিত ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের জানান। তাঁরা এসে এ বিষয়ে কাওসারের কাছে জানতে চান। তখন কাওসার তাঁর লোকজন নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে মার্কেট থেকে বের করে দেন। পরে কলেজের শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে এসে হামলা করেন।

তবে এ বিষয়ে ভিন্ন কথা বলছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দেওয়া ফুহাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এক ছাত্র নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে গেলে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর জেরে ব্যবসায়ীরা তাঁকে কুপিয়ে আহত করেন। এর জেরেই নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। রাত আড়াইটা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। এরপর মঙ্গলবার সকাল থেকে আবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। দিনভর সংঘর্ষে অন্তত ৪১ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আহত একজন পথচারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আহত তিনজন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গুরুতর আহত এক শিক্ষার্থীকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।